Advertisement
০২ মে ২০২৪

হোয়াটসঅ্যাপে খবর, দেহ মিলল পাটখেতে

সোমবার দুপুরে, বসিরহাট থানার মর্গে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট ও বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫২
Share: Save:

ডান হাতে উল্কি দেখে তিন দিন ধরে নিখোঁজ থাকা ভাইয়ের মৃতদেহ শনাক্ত করলেন দাদা। সোমবার দুপুরে, বসিরহাট থানার মর্গে।

গত শুক্রবার বাদুড়িয়ার সলুয়া গ্রামে জলে ভেজা পাটের তলা থেকে মেলে দেহটি। নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ইতিমধ্যে কী ভাবে যেন হোয়াটসঅ্যাপে ছবিটি ছড়িয়ে যায়। রবিবার সকালে মছলন্দপুরে তেঁতুলিয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বসে ছবিটা দেখে আঁতকে ওঠেন নদিয়ার ধানতলার মেয়ে রুমা ঢালি। এই মুখ যে তাঁর চেনা! দ্রুত বাপের বাড়িতে ফোন করে খবর দেন তিনি। তার পরেই বাড়িতে জানাজানি হয় খবরটা।

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম প্রসেনজিৎ রায় (৩২)। তাঁর বাড়ি ধানতলার ডোবাপাড়ায়। বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও আছে দুই ছেলে— একটির বয়স চার বছর, অপরটি দেড় মাসের। তাঁকে যে খুন করা হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। তবে কে তাঁকে খুন করল, তা অবশ্য পরিষ্কার নয়। মছলন্দপুরের এক যুবককে সন্দেহ করা হচ্ছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ জুলাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় দিদির বাড়িতে যান প্রসেনজিৎ। দু’দিন পরে সেখান থেকে চলে আসেন। দিদি ইতিরানি মণ্ডল বলেন, ‘‘বারবার ওর কাছে ফোন আসছিল। বারাসতে যেতে হবে বলে বাস ধরে ও চলে যায়। পরে কয়েক বার ফোনে কথা হয়েছে। ওকে কেউ খুন করতে পারে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি।”

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১ ও ২ অগস্টেও বাড়িতে ফোন করেছিলেন প্রসেনজিৎ। মায়ের সঙ্গে কথা হয়। জানান, বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু ফেরেননি। তার পর থেকে তাঁর ফোনটাই বন্ধ হয়ে যায়। খবর না পেয়ে পরিবারের লোকেরা ধানতলা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। উলুবেড়িয়া থানায় আর এক দফা নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় রবিবার। তার দু’দিন আগেই অবশ্য চাষিরা পাটখেতে দেহ পড়ে থাকতে দেখেছিলেন। প্রসেনজিতদের বাড়ি রানাঘাট ২ ব্লকের কামালপুর পঞ্চায়েতের দৌলা ডোবাপাড়ায়। তারা দুই ভাই, পাঁচ বোন। সে সকলের চেয়ে ছোট। সকলেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। প্রসেনজিৎ বেশ কিছু দিন কাজের জন্য দুবাইয়ে ছিলেন। বছর পাঁচেক আগে বাড়ি ফিরে ট্রাক্টর ও জেসিবি মেশিনের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার সূত্রেই তাঁর পরিচয় মছলন্দপুরের সুকান্ত বিশ্বাসের সঙ্গে। বছর দুয়েক ধরে সুকান্ত তাঁর বাড়িতেই থাকতেন। সম্প্রতি সম্পর্কে চি়ড় ধরেছিল। মৃতের মামাতো ভাই প্রবীর বাগচীর দাবি, ‘‘সুকান্ত জেসিবি মেশিন ভাড়া খাটিয়েও লক্ষাধিক টাকা প্রসেনজিৎকে দিচ্ছিল না।’’ এ দিন প্রসেনজিতের স্ত্রী পূজা অবশ্য অভিযোগ করেন, ‘‘আমার বড় জা শম্পার সঙ্গে সুকান্তের একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। তা জেনে যাওয়ায় আমার স্বামীকে খুন করেছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে শম্পার দাবি, “পূজা আমায় ভুল বুঝছে। প্রসেনজিৎকে খুন করার পরে সুকান্ত আমায় ফোন করেছিল। আমার স্বামীকেও খুন করবে বলে সে হুমকি দিচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead body WhatsApp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE