Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

মৃত্যু বাড়ছে ডেঙ্গির হানায়

উত্তর ২৪ পরগনা আনাচ কানাচে পর পর এমন দু’টি ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের চিকিৎসকদের দায়বদ্ধতা নিয়ে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৩
Share: Save:

জ্বরে হাঁসফাঁস মানুষটাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। চিকিৎসাও চলেছিল দিন কয়েক। ‘সুস্থ’ হয়ে গিয়েছে বলে ছেড়ে দেওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই ঘটেছিল বিপত্তি। ফের জাঁকিয়ে জ্বর এবং রাত পোহানোর আগেই মৃত্যু।

উত্তর ২৪ পরগনা আনাচ কানাচে পর পর এমন দু’টি ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের চিকিৎসকদের দায়বদ্ধতা নিয়ে। চাকলার মঞ্জিলআটি গ্রামের মহব্বত আলি মল্লিক (৫৬) জ্বর নিয়ে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন দিন কয়েক। রবিবার ‘সুস্থ’ বলে তাঁকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে সোমবার ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন মহব্বত। রাতে হাবরা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল বটে, তবে, চিকিৎসা শুরুর আগেই মারা যান তিনি। চৌরাশির ঢালিপাড়ার নাসিরা বিবিও (৪৫) বারাসত হাসপাতাল থেকে ‘সুস্থ’ হয়েই ফিরেছিলেন বাড়িতে। তাঁর স্বামী নাসির হোসেন মোল্লা বলছেন, ‘‘কেন যে ওকে ছেড়ে দিল, ঘরে ফিরেই জ্বর, পরের দিনই ছটফট করে মারা গেল নাসিরা।’’

তবে, জ্বরে আক্রান্তের মৃত্যু মিছিল এখানেই শেষ নয়। গত দু’দিনে, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় মারা গিয়েছেন অন্তত আট জন। তার মধ্যে মঙ্গলবারই ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে।

তাঁদের কেউ ডেঙ্গি আক্রান্ত কারও বা জ্বরের কারণ স্পষ্ট করতে পারেননি চিকিৎসকেরা। বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া— ছবিটা প্রায় একইরকম। ডেঙ্গি এবং অজানা জ্বরের থাবা পড়েছে উত্তরবঙ্গেও। গত কয়েক দিনে, শিলিগুড়ি, মালদহ, বালুরঘাট কিংবা মালদহের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য ভবনে ক্রমাগত এসেছে জ্বরে আক্রান্তের মৃত্যুর খবর। উত্তর ২৪ পরগনা জুড়ে জ্বরের প্রকোপ যথেষ্ট। কখনও হাবরা কখনও বা বারাসত জেলা হাসপাতাল থেকে অনেককেই রেফার করা হয়েছিল কলকাতার হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মারা গিয়েছেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক গ্রামগুলিতেও ডেঙ্গি ছায়া ফেলেছে প্রবল ভাবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’মাসে ৩৪২ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের চিকিৎসা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা ১২। নদিয়া জেলা জুড়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাটা প্রায় হাজার ছাড়িয়েছে। গত এক মাসে মৃতের সংখ্যা দুই। বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকা থেকেও নিয়মিত মিলছে ডেঙ্গি এবং অজানা জ্বরে আক্রান্তের খবর, ডেঙ্গির থাবা পড়েছে শিল্প নগরী দুর্গাপুরেও। এখন উপায়? চিকিৎসকেরা অবশ্য অভয় দিচ্ছেন, সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে এলে ডেঙ্গি সারিয়ে তোলা দুঃসাধ্য নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE