Advertisement
E-Paper

কল্যাণী এলপিজি প্ল্যান্টে রান্নার গ্যাসের জোগানে বিলম্ব, বিপাকে রাজ্যবাসীর হেঁশেল

দুর্নীতি, শ্রমিক শোষণ, বঞ্চনা, কর্মী ছাঁটাই এবং বেআইনি ভাবে লোক নিয়োগের প্রতিবাদে দু’মাস ধরে বিক্ষোভ চলছে প্ল্যান্টের গেটে। বিএমএসের এই আন্দোলনে শ্রমিকদের দাবির পক্ষে যুক্ত হয়েছেন কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৪ ১৫:১১
Delay in supply of cooking gas due to labor agitation at Kalyani plant

—প্রতীকী ছবি।

আচমকাই রান্নার গ্যাসের ডেলিভারিতে সঙ্কট তৈরি হয়েছে রাজ্য জুড়ে। গ্যাস বুক করলেও তা পেতে কালঘাম ছুটছে গৃহস্থের। কল্যাণীর ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের বটলিং প্ল্যান্টের গেটে গত দু’মাস ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (বিএমএস)। সেই আন্দোলনের জেরেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের ঠিক করে দেওয়া নীতি মানছেন না কল্যাণীর এই প্ল্যান্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। তার জেরেই আন্দোলন করছেন তাঁরা। তবে গ্যাসের জোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যে বাধার অভিযোগ করছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্ল্যান্টের অভ্যন্তরীণ কাজে তাঁদের কোনও হাত নেই। শ্রমিকদের আন্দোলনকে ‘জনবিরোধী’ তকমা লাগিয়ে দিতেই এমন অভিযোগ আনছেন কল্যাণী প্ল্যান্টের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা।

দুর্নীতি, শ্রমিক শোষণ, বঞ্চনা, কর্মী ছাঁটাই এবং বেআইনি ভাবে লোক নিয়োগের প্রতিবাদে দু’মাস ধরে বিক্ষোভ চলছে প্ল্যান্টের গেটে। বিএমএসের এই আন্দোলনে শ্রমিকদের দাবির পক্ষে যুক্ত হয়েছেন কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে শ্রমিক শোষণ চলছে কল্যাণীর এই প্ল্যান্টে। ইন্ডিয়ান অয়েলের তরফে শ্রমিকপিছু মজুরি প্রায় ৮০০-৮৫০ টাকা দেওয়া হলেও ঠিকাদার তাঁদের মাত্র ৪০০-৫০০ টাকা দিচ্ছেন, পাশাপাশি চলছে ঘুরপথে বেআইনি ভাবে কর্মী নিয়োগ। বিধায়কের আরও অভিযোগ, মহকুমা শাসকের হস্তক্ষেপে জুলাই মাসে দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে সাত দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধানের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। উল্টে আন্দোলন করার অপরাধে নতুন করে প্লান্টের আরও ৫৭ জন লরিচালককে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে যান বিজেপির আট জন বিধায়ক। কিন্তু তাঁদের কথাও শোনা হয়নি।’’

বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানান। তার পরে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের কলকাতায় কর্মরত দু’জন আধিকারিক কল্যাণী প্ল্যান্ট পরিদর্শন করে এসেছেন। তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এ ক্ষেত্রে বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, বাংলার শাসকদলের মদতেই এই ধরনের দুর্নীতি চলছে ওই প্লান্টে। জবাবে নদীয়া ডিস্ট্রিক্ট ইন্ডেন এলপিজি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা তথা রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিএমএস-কে সামনে রেখে আসলে বিজেপির কল্যাণীর বিধায়ক ওখান থেকে অসদুপায়ে টাকা রোজগার করতে চাইছেন। তাই শ্রমিকদের দিয়ে অন্যায্য দাবি করিয়ে ওখানে গোলমাল পাকাতে চাইছেন। আমরা চাই, সাধারণ মানুষ রান্নার গ্যাস পাক। কিন্ত বিজেপি বিধায়কেরা নিজেদের স্বার্থেই ওই প্ল্যান্টে অশান্তি তৈরি করছেন। যার ফলে রাজ্য জুড়ে সাধারণ মানুষ রান্নার গ্যাস পাচ্ছেন না।’’

উল্লেখ্য, গত এক মাস যাবৎ রান্নার গ্যাসের জোগান নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরেরা। ইন্ডেন এলপিজি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশন ওয়েস্ট বেঙ্গল-এর নেতা রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘আমরা সব সময় দ্রুততার সঙ্গে গ্রাহকদের বাড়িতে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিতে চাই। কিন্তু, এখন আমাদের কাছে জোগান না মেলায় গ্রাহককে যথাসময়ে তা দিতে পারছি না।’’ এই আন্দোলন প্রসঙ্গে কল্যাণী প্ল্যান্টের কোনও আধিকারিক মন্তব্য করতে নারাজ। তাই রাজ্যবাসীর রান্নাঘরে গ্যাস আবারও যথাসময়ে কখন পৌঁছবে, তা এখনও বলা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরেরা।

LPG cylinder LPG Cooking Gas Agitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy