Advertisement
E-Paper

ডিন নিয়োগ নিয়েও জলঘোলা যাদবপুরে

প্রস্তাবিত স্ট্যাটিউট বা বিধিতে সংযোজিত অংশ নিয়ে বাদ-প্রতিবাদের পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার বিতর্ক শুরু হল স্থায়ী ডিন নিয়োগ নিয়েও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১৫

প্রস্তাবিত স্ট্যাটিউট বা বিধিতে সংযোজিত অংশ নিয়ে বাদ-প্রতিবাদের পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার বিতর্ক শুরু হল স্থায়ী ডিন নিয়োগ নিয়েও।

যাদবপুরে নিয়মবিধি ভেঙে ডিনের পদে অন্তত তিন জনকে অস্থায়ী ভাবে বসানো হয়েছে বলে সরব হয়েছিল শিক্ষক সংগঠন। এখন ওই সব পদে স্থায়ী নিয়োগের তোড়জোড় চলছে। অন্তত দু’টি শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ, সেই নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও অস্বচ্ছতা
ষোলো আনা। সর্বোপরি ডিনের স্থায়ী পদে আবেদনকারী শিক্ষকদের একাংশও নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মাস তিনেক আগে কলা, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিজ্ঞানের ডিন-পদ শূন্য হওয়ায় অস্থায়ী ভাবে সেই সব পদে ডিন নিয়োগ করা হয়। যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র আহ্বায়ক গৌতম মাইতির বক্তব্য, ডিন নিয়োগের ক্ষেত্রে সব থেকে প্রবীণ শিক্ষককেই প্রথমে সুযোগ দিতে হয়। কিন্তু তাঁদের সুযোগ না-দিয়ে নিয়ম ভেঙে পরিকল্পিত ভাবে কনিষ্ঠদের নিয়োগ করা হয়েছে। আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকেও বিষয়টি জানানো হয়। তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান, অবস্থান করেন শিক্ষকদের একাংশ। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস তখন জানান, যে-জরুরি পরিস্থিতিতে অস্থায়ী ডিন নিয়োগ করা হয়েছে, তাতে সব নিয়মই মানা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আচার্য।

তার পরে স্থায়ী ডিন নিয়োগের জন্য উচ্চশিক্ষা দফতর একটি সার্চ কমিটি গঠন করে। নিয়ম অনুযায়ী এই ধরনের কমিটিতে আচার্যের এক জন প্রতিনিধি থাকেন, যিনি কমিটির চেয়ারম্যান হন। তা ছাড়াও থাকেন সরকারের এক জন এবং উপাচার্যের এক জন প্রতিনিধি। শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াও শিক্ষা পরিচালনার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকেরা ডিনের পদে আবেদন করতে পারেন। তার পরে ওই কমিটি তাঁদের আলোচনা (ইন্টারভিউ)-য় ডাকেন। সেখান থেকে চূড়ান্ত প্যানেল বা তালিকা পাঠানো হয় সরকারের কাছে। এর পরে তালিকা যায় উপাচার্যের কাছে এবং তার সাত দিনের মধ্যে ডিন নিয়োগের পালা সেরে ফেলতে হয়।

আগামী ২৬ এবং ২৯ অগস্ট ওই আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, কিছু আবেদনকারী সেখানে ডাক পাননি। আবেদনকারী শিক্ষকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন গোটা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েই। এক আবেদনকারী শিক্ষক বলেন, ‘‘সমান বা কম যোগ্যতার অনেকেই আলোচনায় ডাক পেলেন। অথচ পাঁচ-ছ’জন কেন ডাক পেলেন না, তা জানতে চেয়ে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছি।’’ অন্য এক আবেদনকারী শিক্ষক জানান, কেন তাঁকে ডাকা হয়নি এবং তাঁর আবেদন কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা জানতে চেয়ে তিনি উপাচার্যের কাছে আবেদন করেছেন।

আর আবুটা-র তরফে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘গোটা প্রক্রিয়ায় যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে এবং আইনসম্মত ভাবেই যাতে সব কাজ হয়, সেই আর্জি জানিয়ে আচার্য, উপাচার্য এবং শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। বুধবার ফের উপাচার্যের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।’’ অন্য শিক্ষক সংগঠন জুটা-ও উপাচার্যের কাছে একই দাবি জানিয়েছে। ‘‘শিক্ষকেরা যাতে সম্মান নিয়ে কাজ করতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়েছে,’’ বললেন জুটা-র সভানেত্রী নীলাঞ্জনা গুপ্ত।

তবে শাসক দল তৃণমূলের সমর্থক শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র দাবি, সব কিছু নিয়ম মেনেই হচ্ছে। আর উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু জানিয়ে দেন, আইন অনুযায়ী ডিন নিয়োগের প্রক্রিয়ার সঙ্গে উপাচার্যের সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। তাই এই বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাফ কথা, ডিন নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের কিছু করার নেই। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সার্চ কমিটি যাঁকে বা যাঁদের বাছাই করবে, তাঁদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ই।

jadavpur university ju
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy