৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, জেলা প্রশাসন থেকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও শিক্ষা নিচ্ছে না দক্ষিণ দমদম পুরসভা। কোনও হেলদোলই নেই তাঁদের। অভিযোগ এমনটাই। তার খেসারত দিচ্ছে হচ্ছে বাসিন্দাদের। ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। বাসিন্দাদের দাবি, ফের অজানা জ্বর আর ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে। অথচ পুরসভার কোনও তৎপরতাই নেই।
রবিবার দুপুরে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে মৃত্যু হল বাগুইআটির শাস্ত্রী পল্লির বাসিন্দা মায়া মিত্রের(৫০)।
মৃতের এক আত্মীয় ঝন্টু মিত্র জানান, চলতি সপ্তাহে সোমবার থেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই মহিলা। বৃহস্পতিবার তাঁকে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার থেকেই তাঁর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। প্লেটলেট দশ হাজারেরও নিচে নেমে গিয়েছিল। তাঁকে রক্তও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
রবিবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
স্থানীয় ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কস্তুরী চৌধুরী জানান, জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই মহিলা। তাঁকে রক্ত দেওয়ার জন্য ব্লাড কার্ড ওয়ার্ডের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে।
শুধুমাত্র ২৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। তার পরেও অবশ্য পুরসভার দাবি, দক্ষিণ দমদম পুরসভা মশা নিয়ন্ত্রণে জোর কদমে কাজ করছে। ওই ওয়ার্ডেও পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে ওই ওয়ার্ডের পাশ ধরে বাগজোলা খালের একটি অংশ গিয়েছে। খাল সংস্কারের বিষয়ে সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে।
কিন্তু বাসিন্দারা অবশ্য পুরসভার দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে কার্যত মহামারীর আকার নিয়েছে অজানা জ্বর আর ডেঙ্গি। ঘরে ঘরে জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা। এমন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে পুরপ্রশাসনের যে ধরণের তৎপরতার প্রয়োজন তা দেখা যাচ্ছে না।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশা বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কী ভাবে করতে তা জানেই না পুরসভা। তাঁদের অপদার্থতা এবং গাফিলতির জন্যই রোগ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশার উৎস খুঁজে বের করে তা ধ্বংস করা, জমা জল দূর করা, মশার তেল স্প্রে করা, প্রয়োজনে কামান দাগা, সচেতনার প্রচারে জোর দেওয়ার কাজ হচ্ছে বলে পুরসভা দাবি করলেও বাসিন্দারা তা মানতে নারাজ।
বাসিন্দাদের এমন ক্ষোভ থাকলেও তা নিয়ে কোনও হেলদোলই নেই দক্ষিণ দমদম পুরসভার। চেয়ারম্যান পারিষদ(স্বাস্থ্য) গোপা পাণ্ডে দিনভর ফোন ধরেননি। এসএমএস করা হলেও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: রক্তদান দিবসেই রক্তের হাহাকার