পোস্তার উড়ালপুল-বিপর্যয়ের তদন্তে নেমে নির্মাতা ঠিকাদার সংস্থার একেবারে মাথা ধরে টানতে চাইছে লালবাজার।
আর তাই হায়দরাবাদের কোম্পানিটির এক শীর্ষ কর্তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে রবিবার হায়দরাবাদের বানজারা হিলস, বিজয়নগর-সহ বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা। কর্তাটির খোঁজ মেলেনি। তবে পঞ্চবটীতে সংস্থার কর্পোরেট অফিস ঢুঁড়ে বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। যেগুলোর ভিত্তিতে কোম্পানির আরও সাত ডিরেক্টরের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা চেয়ে লালবাজার কোর্টে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুলের নির্মাতা সংস্থা আইভিআরসিএল-এর যে শীর্ষ কর্তার নামে পরোয়ানা জারি হয়েছে, তাঁর নাম অশোক রেড্ডি। তিনি কোম্পানির ডিরেক্টর (অপারেশন্স)। সেই সুবাদে সংস্থার পরিচালন বোর্ডের তরফে বিবেকানন্দ রোড পথ-সেতুর নির্মাণকাজ দেখভালের মূল দায়িত্ব তাঁর উপরে ন্যস্ত ছিল।
এই কারণেই ওঁকে জেরা করার তাগিদ বোধ করেছিলেন তদন্তকারীরা। বস্তুত অশোক রেড্ডি-সহ আইভিআরসিএল বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সমস্ত সদস্যকে লালবাজারে তলব করা হয়েছিল। অন্যরা কলকাতায় হাজির হলেও অশোক সাড়া দেননি। তাই ওঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন নিয়ে গত সপ্তাহে লালবাজার কোর্টের দ্বারস্থ হয়। তার পরে রবিবার হায়দরাবাদে হানা দেয় গোয়েন্দা-দল।
গত ৩১ মার্চ ভরদুপুরে পোস্তায় নির্মীয়মাণ উড়ালপুলটির একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ায় ২৭ জনের প্রাণ গিয়েছে, আহত অন্তত ৯০। নির্মাণে গাফিলতির অভিযোগে আইভিআরসিএলের ১০ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ-সূত্রের খবর: নির্মাতা সংস্থার পাশাপাশি প্রকল্পের মূল হোতা তথা তত্ত্বাবধায়ক কেএমডিএ’র বিরুদ্ধেও গাফিলতির প্রাথমিক প্রমাণ মজুত। রাজ্য সরকারি সংস্থাটির ১২ জনকে ইতিমধ্যে লালবাজারে ডেকে জেরাও করা হয়েছে। যদিও সংস্থার কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি, যার প্রেক্ষিতে নানা মহলে প্রশ্নও উঠেছে। তদন্তকারীদের অবশ্য দাবি, দায়ী ব্যক্তিদের এখনও নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা যায়নি বলে কেএমডিএ’র কাউকে হেফাজতে নেওয়া যাচ্ছে না।
এ দিকে নির্মাণ বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘রাইটস’-এর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মঙ্গলবার ফের ঘটনাস্থলে যান লালবাজারের তদন্তকারীরা। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবের আধিকারিকেরা। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) দেবাশিস বড়ালও হাজির ছিলেন। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইস্পাত ও কাঠামো খতিয়ে দেখে বিশেষজ্ঞেরা মালমশলার নমুনা সংগ্রহ করেন।
প্রসঙ্গত, সেতুভঙ্গের কারণ অনুসন্ধানে কলকাতা পুলিশকে সরাসরি সাহায্য করার জন্য রেলের সহযোগী সংস্থা রাইটস’কে সোমবার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতার আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy