দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভকারী চাকরিপ্রার্থীরা। ফাইল চিত্র।
যেন সত্যজিৎ রায়ের ‘সোনার কেল্লা’য় জটায়ুর মুখে সেই বিখ্যাত সংলাপ— ‘কোনও প্রশ্ন নয়।’
বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে কি শিক্ষা বিষয়ক প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস? অধিবেশনের আগে অন্তত দলীয় বিধায়কদের কাছে এই মর্মে ফোন-বার্তা পৌঁছেছে। তা থেকেই দানা বেঁধেছে এই গুঞ্জন।
এ বারের বাজেট অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হলেও, বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ১০ জুন। গুরুত্বপূর্ণ এই অধিবেশনে রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বদল সংক্রান্ত বিল-সহ বিভিন্ন বিল আনার কথা রয়েছে। সূত্রের খবর, তার আগেই তৃণমূলের পরিষদীয় দলের তরফে বিধায়কদের বলা হয়েছে, শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর-পর্বে তোলার দরকার নেই। বদলে অন্য যে কোনও দফতর সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন বিধায়কেরা।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ধারাবাহিক ভাবে তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও চলছে। এই অবস্থায় বিধানসভার অধিবেশনেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে তৃণমূল। সাধারণত দলের যে বিধায়কেরা বিভিন্ন দফতরের কাজকর্ম নিয়ে অধিবেশনে মন্ত্রীদের কাছে প্রশ্ন করেন, তাঁদের কাছে নির্দিষ্ট করে শিক্ষা সংক্রান্ত এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। এ রকম এক বিধায়ক বলেন, ‘‘পরিষদীয় দলের তরফ থেকে নির্দিষ্ট করেই শিক্ষা দফতর সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন না করতে বলা হয়েছে।’’
অধিবেশন চলাকালীন প্রত্যেক মঙ্গলবার শিক্ষা দফতর সংক্রান্ত আলোচনা হয়। ওই নির্দিষ্ট দিনের প্রশ্নোত্তর পর্বেও শিক্ষা সংক্রান্ত প্রশ্ন ওঠে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী তাঁর জবাব দেন। সেখানে বিরোধী বিধায়কেরাও এ নিয়ে মন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে পারেন। সেই সম্ভাবনা থাকলেও, অন্তত দলের কোনও বিধায়কের প্রশ্নে যাতে মন্ত্রী তথা সরকারকে বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার অন্য আরও কয়েকটি দফতর নিয়েও আলোচনা হয়। এ বার তৃণমূল বিধায়কদের অধিবেশন চলাকালীন মঙ্গলবারের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ, অগ্নিনির্বাপণ ও পরিবেশের মতো অন্যান্য দফতরের বিষয়ে প্রশ্ন করতে বলা হয়েছে।
বর্ষাকালীন এই অধিবেশনের আগে অন্যান্য প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে শাসক শিবিরে। বিশেষত গত মার্চে অনুষ্ঠিত বাজেট অধিবেশনের গোলমালের কথা মাথায় রেখেই নিজেদের কৌশল নির্ধারণে মন দিয়েছে সরকারপক্ষ। বাজেট অধিবেশনের সেই গোলমালের জেরে বিরোধী দলনেতা-সহ বিজেপির সাত বিধায়ক এখনও ‘সাসপেন্ড’ হয়ে রয়েছেন। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও, এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন পরে অধিবেশন শুরুর আগে পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকেছে তৃণমূল। সেখানেই অধিবেশন চলাকালীন দলীয় বিধায়কদের উপস্থিতি ও অন্যান্য করণীয় বুঝিয়ে দেবেন দলীয় নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy