Advertisement
E-Paper

‘স্মার্ট’ হতে কি নারাজ রাজ্য, জল্পনা তুঙ্গে

স্মার্ট সিটি কি এখনই চাইছে না রাজ্য? কেন্দ্রীয় সরকারের স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্প থেকে কি সরে আসবে পশ্চিমবঙ্গ? এমনই জল্পনা ঘুরছে নিউ টাউন থেকে বিধাননগরে। যদিও মুখে কিছু বলছেন না কেউই।

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৬ ০৯:৩৬

স্মার্ট সিটি কি এখনই চাইছে না রাজ্য? কেন্দ্রীয় সরকারের স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্প থেকে কি সরে আসবে পশ্চিমবঙ্গ?

এমনই জল্পনা ঘুরছে নিউ টাউন থেকে বিধাননগরে। যদিও মুখে কিছু বলছেন না কেউই।

ইতিমধ্যেই স্মার্ট সিটির তকমা পেয়েছে নিউ টাউন। এ বার সম্ভাবনা বিধাননগরের। দৌড়ে রয়েছে রাজ্যের আরও দু’টি শহরও। যদিও নগরোন্নয়ন দফতরে কানাঘুষো চলছে, স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্প থেকে সরে আসার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই বিধাননগর পুরনিগমকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে ‘কার্যত’ নিষেধই করা হয়েছে বলে একাংশের খবর। তবে সবটাই মৌখিক। এমনকী নিউ টাউন সুযোগ পেলেও ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে নাম প্রত্যাহারের চিন্তাভাবনাও চলছে বলে দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে।

কিন্তু কেন এই ভাবনা?

কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রশাসনের অন্দরে। প্রথমত, আর্থিক দিক থেকে এই প্রকল্প রাজ্যের কাছে তেমন আশাব্যঞ্জক নয়। এক উচ্চপদস্থ কর্তার মতে, স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি স্মার্ট সিটির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সমপরিমাণ ব্যয়ভার বহন করার কথা। পাঁচ বছরের প্রকল্পে স্মার্ট সিটি পিছু কেন্দ্র দেবে ৫০০ কোটি টাকা। ফলে ম্যাচিং গ্রান্টে একই অঙ্কের টাকা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।

নবান্ন সূত্রে খবর, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের এই বিপুল ব্যয়ভার বহন করা অযৌক্তিক। আবার, প্রকল্পে গেলে নিউ টাউনের পাশাপাশি বাকি তিনটি শহরও যদি স্মার্ট সিটি হয়, সে ক্ষেত্রে প্রতি বছর চারটি শহরের জন্য বিপুল টাকা বরাদ্দ করতে হবে রাজ্যের কোষাগারকে। সেই টাকা শুধুমাত্র চারটি এগিয়ে থাকা শহরের জন্য খরচ না করে রাজ্যের ১২৬টি পুর-এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নে কাজে লাগানোই শ্রেয় মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনের একটি অংশের মতে, রাজ্যের একাধিক পিছিয়ে পড়া শহরের পরিকাঠামো সংস্কার আশু প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রীর এই যুক্তিতে সায় দিচ্ছেন তাঁরাও। কারণ তাঁদের মতে, বাকি ১২২টি পুর-এলাকাকে বঞ্চিত করে শুধু চারটি শহরকে এই বিপুল টাকা বরাদ্দ করলে তা বৈষম্যের ভাবনাও তৈরি করতে পারে।

দ্বিতীয়ত, নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর— স্মার্ট সিটি নির্বাচনের অন্যতম মাপকাঠি হল, শহরের উন্নয়নে কী পরিকল্পনা রয়েছে এবং তার রূপায়ণে কী ধরনের আর্থিক পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শর্ত অনুযায়ী মাপকাঠি মিলিয়ে সামগ্রিক ভাবে প্রকল্পের কাজ দেখভালের জন্য একটি লিমিটেড কোম্পানি তৈরি করতে হবে। প্রশাসনের একটি অংশের মতে, ওই লিমিটেড কোম্পানির পরিচালক মণ্ডলীতে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা থাকার সুযোগ কম। বেশি নির্ভর করতে হবে আমলাদের উপরেই। সে ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের প্রয়োজনীয়তা কমবে। আর সেটাই এই প্রকল্পে অনাগ্রহের কারণ বলে দাবি করছেন কেউ কেউ।

যদিও এ নিয়ে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কর্তারা মুখ খুলতে চাননি। মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন খোদ পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিধাননগর পুর নিগমের মেয়র সব্যসাচী দত্তও বলেন, ‘‘এ প্রসঙ্গে আমার কিছু বলার নেই। রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলুন।’’

তবে প্রশাসনেরই একটি মহলের অবশ্য পাল্টা দাবি, স্মার্ট সিটি করার পিছনে খরচ করলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে কিছু সুবিধাও মিলত। সেই দিকটি নিয়েও ভাবা দরকার।

smart city West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy