আর কয়েক মাস পরেই বেজে যাবে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের দামামা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর কেন্দ্রেই ফের প্রার্থী হচ্ছেন ধরে নিয়েই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘুঁটি সাজানো শুরু করেছেন। রবিবার সন্ধ্যায় ভবানীপুর বিধানসভার ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের অরফ্যানগঞ্জে উৎসবের মরসুমকে কেন্দ্র করে এক সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহ। সেই অনুষ্ঠানেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতা-কর্মীদের কোমর বাঁধার নির্দেশ দেন তিনি।
শুভেন্দু বলেন, ‘‘একটু সহযোগিতা করুন, কথা শুনুন। বাকিটা বুঝে নেব। মিথ্যা মামলা দিলে জামিন করানোর দায়িত্ব আমাদের। মাথা নিচু করবেন না। আক্রান্ত হলে পাশে দাঁড়াব, পরিবারের দায়িত্ব নেব। ব্যবসা বন্ধ করলে ব্যবসা করে দেব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২০টি রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আছে। ভুবনেশ্বর, গুয়াহাটি, আগরতলায় নিয়ে গিয়ে ব্যবসা করিয়ে দেব। কাজ কেড়ে নিলে কেড়ে নেবে। এখানে তো ৬ হাজার ৮ হাজার টাকার বেশি কাজ করানো যায় না। বিজেপি করতে গিয়ে যদি কারও কাজ কেড়ে নেয়, তা হলে আমার কাছে আসবেন, হরিয়ানায় নিয়ে যাব। জোট বাঁধুন, তৈরি হোন। এই সিট নিতে হবে।’’
শুভেন্দুর এমন বক্তৃতা প্রসঙ্গে বাংলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, ভবানীপুরে যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে যেতে হবে, তাই বিজয়া ও দীপাবলি উৎসবের পর সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে মিলিত হতে এসে কার্যত ভোকাল টনিক দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভোটে অংশগ্রহণ করতে বিজেপি নেতা-কর্মীরা যাতে কোনও ভাবেই হতোদ্যম হয়ে না পড়েন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চান শুভেন্দু। তাই ভবানীপুরের কর্মীমহলের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিয়মের অনুষ্ঠানে এসেও, গরমাগরম বক্তৃতা করে আসলে পদ্ম শিবিরের ভোটের অস্ত্রে শান দিতে চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, ভবানীপুরে যাতে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনে (এসআইআর) বিজেপি নেতারা গোড়া থেকেই যাতে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেন সেই বিষয়েও বেশ কিছু নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
২০২১ সালের অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রী ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে ৫৬ হাজার ভোটে জয়ী হলেও, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে সেই ব্যবধান নেমে সাড়ে সাত হাজার হয়ে গিয়েছে। কর্মীদের সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। এই বিধানসভার আটটি ওয়ার্ডের মধ্যে যে বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী পাঁচটি ওয়ার্ডে এগিয়েছিলেন, তা-ও জানিয়েছেন তিনি।