Advertisement
E-Paper

কপ্টারে পর্যটনের প্রসার নিয়ে প্রশ্ন

রাজ্যের উড়ান-মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জঙ্গলমহল! পবনহংস হেলিকপ্টার সংস্থার হাত ধরে এ বার অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামেও হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করতে চায় রাজ্য সরকার। এ জন্য মঙ্গলবার অরণ্যশহরের রাজ কলেজের মাঠে পরীক্ষামূলক ভাবে ‘কলকাতা-ঝাড়গ্রাম সার্ভিস’ উড়ানের মহড়া হয়ে গেল। তবে নিয়মিত উড়ানের জন্য ওই হেলিপ্যাডের তিনশো মিটার বৃত্তাকার এলাকা ফাঁকা থাকা প্রয়োজন।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৫ ০১:১৯
চলছে মহড়া। রাজ কলেজ মাঠে তোলা নিজস্ব চিত্র।

চলছে মহড়া। রাজ কলেজ মাঠে তোলা নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যের উড়ান-মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জঙ্গলমহল! পবনহংস হেলিকপ্টার সংস্থার হাত ধরে এ বার অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামেও হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করতে চায় রাজ্য সরকার। এ জন্য মঙ্গলবার অরণ্যশহরের রাজ কলেজের মাঠে পরীক্ষামূলক ভাবে ‘কলকাতা-ঝাড়গ্রাম সার্ভিস’ উড়ানের মহড়া হয়ে গেল। তবে নিয়মিত উড়ানের জন্য ওই হেলিপ্যাডের তিনশো মিটার বৃত্তাকার এলাকা ফাঁকা থাকা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে হেলিকপ্টার সংস্থাটির তরফে এদিন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে মাঠ সংলগ্ন কয়েকটি বিদ্যুতের খঁুটি সরানোর জন্য ও একটি গাছ কাটার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলের কেন্দ্রভূমি ঝাড়গ্রাম শহরে সব সময়ই প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তা ও ভিআইপিদের আনাগোনা রয়েছে। জঙ্গলমহলে রয়েছে একাধিক সিআরপি ক্যাম্প। আপত্‌কালীন প্রয়োজনেও তাই কপ্টার-সার্ভিসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেই সঙ্গে ঝাড়গ্রামের পর্যটন প্রসারেও কপ্টার-পরিবেষা সহায়ক হবে বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। মাস খানেক আগে বাঁকুড়া থেকে সড়কপথে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে এই কলেজ মাঠ থেকেই হেলিকপ্টারে করে কলকাতা ফিরে গিয়েছিলেন মমতা। এরপর এই মাঠেই স্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরির জন্য ভাবনা চিন্তা শুরু হয় প্রশাসনিক মহলে।

এ দিন কলকাতার বেহালা ফ্লাইং ক্লাব থেকে উড়ে আসা পবনহংসের ‘ভিটি-ইএনএক্স’ কপ্টারটি সকাল দশটা নাগাদ ঝাড়গ্রামের কলেজ মাঠে নামে। হাজির ছিলেন ঝাড়গ্রামের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক চট্টোপাধ্যায় এবং এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) বিবেক বর্মা। এ ছাড়াও ছিলেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা। হেলিপ্যাডের চারপাশে ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি। হেলিকপ্টার থেকে নেমে পবনহংস সংস্থার আধিকারিক শুভাশিস চক্রবর্তী এবং দুই পাইলট বেশ কিছুক্ষণ ধরে হেলিপ্যাডটি পর্যবেক্ষণ করেন। মাঠে দাঁড়িয়েই প্রশাসন-পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। সাড়ে দশটা নাগাদ কপ্টার উড়ে যায় মেদিনীপুরের উদ্দেশে। সেখানেও হেলিপ্যাডে নামার মহড়া হয়। এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) বিবেক বর্মা বলেন, “রাজ কলেজের মাঠটি সংস্থার আধিকারিক ও পাইলটদের পছন্দ হয়েছে। তবে স্থায়ী হেলিপ্যাডের জন্য মাঠ সংলগ্ন কিছু বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর কথা বলেছেন সংস্থার আধিকারিক ও পাইলটরা।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পবনহংস সংস্থা, পূর্ত দফতর ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের ছাড়পত্র মিললেই বাণিজ্যিক ভাবে কলকাতা-ঝাড়গ্রাম কপ্টার পরিষেবা শুরু হবে। তবে কপ্টার পরিষেবা নিয়ে অরণ্যশহরের বাসিন্দাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে। চিকিত্‌সক প্রসূন ঘোষ বলেন, “কপ্টার পরিষেবা চালু হলে গুরুতর জখম অথবা অসুস্থ রোগীদের দ্রুত কলকাতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিত্‌সকরাও এখানে এসে মতামত দিতে পারবেন। তবে অর্থবানরাই এই সুযোগ নিতে পারবেন।’’অরণ্যশহরের পর্যটন ব্যবসায়ী সুমিত দত্ত বলেন, “বাণিজ্যিক ভাবে কপ্টার পরিষেবা চালু হলে এখানে বিত্তশালী পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতে সরাসরি প্রভাব পড়বে। উপকৃত হবেন এলাকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরা।”

ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা নিখিল মাইতির অবশ্য কটাক্ষ, “বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীদের যাতায়াতের জন্যই কপ্টার-পরিষেবা চালু হচ্ছে।”

junglemahal kingshuk gupta helicopter tourism expansion copter tourism helicopter tourism pavanhans copter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy