রাতের শহরে ফের রাস্তায় রেষারেষি। যার জেরে দু’টি লরির প্রায় মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক লরিচালকের। শুক্রবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বন্দর থানা এলাকার হাইড রোডে। ক্ষতিগ্রস্ত লরিটির চালকের দিকের অংশ দুমড়ে ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। পুলিশ গিয়ে কোনও মতে চালককে বার করে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শেখ ইমরান (২৮)। তাঁর বাড়ি মোমিনপুরে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, পর্যাপ্ত পুলিশি নজরদারি থাকলে এমন রেষারেষির জেরে দুর্ঘটনা বার বার ঘটছে কী করে? যদিও লালবাজারের তরফে দাবি, রাতের শহরের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকেও এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ পশ্চিম বন্দর থানায় দুর্ঘটনার খবর আসে। পুলিশ গিয়ে দেখে, একটি বড় লরির সঙ্গে একটি ছোট মালবাহী লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে ছোট লরিটির সামনের দিক কার্যত দুমড়ে গিয়েছে। চালকের দিকের অংশটি এমন ভাবে ভেঙে ভিতরের দিকে ঢুকে গিয়েছে যে, সে দিক দিয়ে ঢোকা যাচ্ছে না। চালককে বার করতে এর পরে গ্যাস কাটার নিয়ে আসা হয়। কোনও মতে লরির লোহার অংশ কেটে চালককে বার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এর পরেই ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অন্য লরিটির চালককে গ্রেফতার করে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, হাইড রোড ধরে জৈন কুঞ্জের দিকে যাচ্ছিল একটি লরি। সেটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে পাশের একটি গাড়িকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করছিল। কিছুটা পথ তাদের মধ্যে রেষারেষি চলার পরে লরিটি উল্টো দিকের লেন ধরে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেই সময়ে উল্টো দিক থেকে আসা ইমরানের লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় প্রথম লরিটির। পুলিশ দু’টি লরি আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে যে গাড়িটির সঙ্গে লরিটির রেষারেষি চলছিল, সেটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগেই কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা বাস-সহ সমস্ত বড় গাড়ির ‘ব্লাইন্ড স্পট’ নিয়ে বিশেষ ভাবে সতর্ক করেন। কয়েকটি বাসে আলাদা করে আয়না লাগিয়ে এই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার পরেও এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, রেষারেষির বিষয়ে কবে আরও কড়া পদক্ষেপ করবে পুলিশ?
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)