কপ্টার সংস্থার লাইসেন্সে সমস্যা। তাই এসআইআর বিরোধী কর্মসূচিতে যোগ দিতে হেলিকপ্টারের পরিবর্তে সড়কপথে বনগাঁ পৌঁছোন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দুপুরে বনগাঁর ত্রিকোণ পার্কে এসআইআর-বিরোধী সভায় বক্তৃত শুরু করেই এই বিষয়ে মুখ খোলেন তিনি। তোপ দাগেন বিজেপিকে। তিনি বলেন, “আমার আসতে দেরি হল। একটা মজা আছে। আমি সাত-আট মাস হেলিকপ্টার ব্যবহার করি না। চুক্তি (এগ্রিমেন্ট) করে একটা হেলিকপ্টার নেওয়া আছে রাজ্য সরকারের। সকালে বলল যাবে না। বেরোনোর কথা ছিল ১২টায়। সভা (মিটিং) ছিল সাড়ে ১২টায়। ইলেকশনই শুরু হল না সংঘাত শুরু হয়ে গেল। রাস্তায় আসতে আসতে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল।” তার পরেই পদ্মশিবিরকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপিকে বলি, ওরে আমার সঙ্গে খেলতে যাস না। আমি যেটা খেলব, তাতে আমার নাগাল পাবে না, ধরতেও পারবে না।”
মঙ্গলবার বনগাঁর ত্রিকোণ পার্কে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর প্রতিবাদে সভা করার পর চাঁদপাড়া থেকে ঠাকুরনগর পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী। ওই জোড়া কর্মসূচিতে যোগ দিতেই কপ্টারে বনগাঁ যাওয়ার কথা ছিল তাঁর।
প্রশাসনিক সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে, হেলিকপ্টারে মুখ্যমন্ত্রীর বনগাঁ যাওয়ার কথা ছিল, সেটিতে লাইসেন্স সংক্রান্ত একটি সমস্যা দেখা গিয়েছে। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সড়কপথেই বনগাঁ যাচ্ছেন মমতা। প্রশাসনিক ওই সূত্র মারফত এ-ও জানা গিয়েছে যে, গত ছ’মাস মুখ্যমন্ত্রী ওই কপ্টার ব্যবহার করেননি। কপ্টারটির উড়ান সংক্রান্ত লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। নিয়ম মোতাবেক, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগের দিন, সোমবার কপ্টারটি মহড়াও দেয়। কিন্তু সেই সময়ও লাইসেন্সের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি বলে ওই সূত্রের দাবি। মঙ্গলবার উড়ান সংস্থার তরফে বিষয়টি জানানো হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, কেন এমন হল, তা তদন্ত করে দেখা হবে। বিষয়টি ‘খুব সহজ’ বলে মনে করছে না নবান্ন।
স্বাভাবিক ভাবেই সড়কপথে বনগাঁ পৌঁছোতে তাঁর কিছুটা বেশি সময় লাগে। সে কারণে মুখ্যমন্ত্রীর সভা এবং পদযাত্রার সময়ও কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় মুখ্যমন্ত্রীর সভা শুরু হওয়ার কথা ছিস। তার পর আড়াইটে নাগাদ পদযাত্রা শুরু হবে বলে স্থির ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বনগাঁর সভাস্থলে পৌঁছোন দুপুর ২টো নাগাদ। সভাস্থলে পৌঁছেই বক্তৃতা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। সভা শেষ হওয়ার পর শুরু হবে পদযাত্রা।
আরও পড়ুন:
রাজ্যে এসআইআর শুরু হওয়ার পরে মতুয়াদের একাংশের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েক জন আত্মঘাতী হয়েছেন। এই নিয়ে মতুয়া অনুগামীদের নিয়ে অনশনে বসেন মতুয়া ঠাকুরবাড়ির সদস্য তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। রাজ্যে যে দিন এসআইআর শুরু হয়, সেই ৪ নভেম্বর কলকাতায় পদযাত্রা করেছিলেন মমতা। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রেড রোডে বিআর অম্বেডকরের মূর্তির সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মিছিল শেষ হয় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সামনে। মঙ্গলবার এসআইআরের বিরুদ্ধে বনগাঁয় কর্মসূচি করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।