নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার তৃণমূল নেতা জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল ইডি। শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়কের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মূল চার্জশিট ১০০ পৃষ্ঠার হলেও নথি ও অন্যান্য কাগজপত্র মিলিয়ে মোট ১২০০ পৃষ্ঠা রয়েছে সেই চার্জশিটে। মামলায় এখনও পর্যন্ত ২০ জন সাক্ষীর বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছে।
চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অন্তত ৭৫ জন চাকরিপ্রার্থীকে বেআইনি ভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। তাঁদের কারও কাছ থেকে দু'লক্ষ, কারও থেকে পাঁচ লক্ষ, এমনকি কারও কারও কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকাও নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের একটি অ্যাকাউন্টেরও খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। ইডির দাবি, ওই অ্যাকাউন্ট মারফত টাকা লেনদেন করা হত। শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সমেত চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৭ অক্টোবর বিচারভবনে ওই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল জীবনকে গ্রেফতার করেছিল আর এক কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। সে বার সুপ্রিম কোর্টে তিনি জামিন পেয়ে যান। সম্প্রতি তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, এসএসসি মামলার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল বিধায়কের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং লেনদেনের হদিস মিলেছে। শুধু জীবনকৃষ্ণ নন, তাঁর ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টেও লেনদেন হয়েছে বলে খবর। অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে ৪০ লক্ষেরও বেশি টাকা অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। কারও কারও কাছ থেকে একাধিক দফায় টাকা নেওয়া হয়েছিল। অথচ তাঁদের অধিকাংশই চাকরি পাননি।
আরও পড়ুন:
-
ভবানীপুরে ‘বহিরাগত’ নিয়ে কী বলেছিলেন? গিরিশ পার্কে কালীপুজো উদ্বোধনে গিয়ে ব্যাখ্যা করলেন মমতা
-
অপহরণের নালিশ, গ্রেফতার সিভিক
-
‘সরকার পাল্টে দিন, বাংলায় অনুপ্রবেশ বন্ধ করব’! আবার হুঙ্কার শাহের, এসআইআর নিয়েও কটাক্ষ মমতাকে
-
শতাব্দীর ভাষণের সময় ‘দ্বিখণ্ডিত’ তৃণমূল, উঠল কেষ্ট এবং কাজলের নামে আলাদা স্লোগান, বিরক্ত সাংসদ
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গত অগস্ট মাসে রাজ্যের একাধিক জায়গায় হানা দেয় ইডি। মুর্শিদাবাদের কান্দির আন্দি গ্রামে জীবনকৃষ্ণের বাড়িতেও হানা দেন তদন্তকারীরা। ওই অভিযানেই গ্রেফতার হন জীবনকৃষ্ণ। তার আগে নিজের ফোনটি ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। পরে নর্দমা থেকে সেই ফোন উদ্ধার হয়। উল্লেখ্য, নিয়োগ মামলায় সিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ার আগেও প্রমাণ লোপাটের জন্য জীবনকৃষ্ণ নিজের দু’টি মোবাইল ফোন পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। দীর্ঘ তল্লাশির পর পুকুরের জল ছেঁচে তা উদ্ধার করা হয়।