ভুয়ো পাসপোর্ট কাণ্ডে ধৃত আজাদ মল্লিক ওরফে আহমেদ হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গত ১৩ জুন দাখিল করা চার্জশিটে ইডি আজাদকে পাকিস্তানি বলেই দাবি করে। তারা জানায়, ধৃতের মোবাইল থেকে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গিয়েছে। সেই ড্রাইভিং লাইসেন্সে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, আজাদ পাকিস্তানের নাগরিক। ১৯৯৪ সালে ওই লাইসেন্স তৈরি করা হয়েছিল। ওই ড্রাইভিং লাইসেন্সে যা তথ্য মিলেছে, তা ধৃতের ব্যক্তিগত তথ্যের সঙ্গে মিলে গিয়েছে বলেও আদালতে দাবি করল ইডি।
গত ১৬ এপ্রিল বিরাটি থেকে আজাদকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে আজাদ এবং ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের হদিস পায় তারা। চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, আহমেদ হোসেন ‘আজাদ মল্লিক’ ছদ্মনামে ভারতে বেআইনি ভাবে বসবাস করছিলেন এবং ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, আজাদ বাংলাদেশের নাগরিক। ভুয়ো নথি বানিয়ে ভারতে থাকছিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, আরও অভিযোগ ছিল টাকার বিনিময়ে ভুয়ো পাসপোর্ট এবং ভিসা তৈরির চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আজাদ।
গ্রেফতারির পর আজাদকে হেফাজতে নেওয়া এবং তাঁর মোবাইল, ল্যাপটপ-সহ অন্যান্য নথি বাজেয়াপ্ত করার কথা চার্জশিটে দাবি করেছে ইডি। তবে প্রথমে আজাদকে বাংলাদেশের নাগরিক মনে করা হলেও পরে জানা যায়, তিনি পাকিস্তানি। মোবাইল থেকে প্রাপ্ত নথি থেকেই মেলে সেই হদিস। পাশাপাশি, কী ভাবে ভুয়ো পাসপোর্ট ব্যবসার চালাতেন আজাদ এবং কী ভাবে টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে স্থানান্তরিত করতেন, তা-ও চার্জিশিটে জানিয়েছে ইডি।
ইডির দাবি, আজাদ ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে অবৈধ আন্তঃসীমান্ত লেনদেন করতে হাওয়ালা চক্র চালাতেন। নগদের পাশাপাশি অনলাইনেও (ইউপিআই) টাকা নিতেন আজাদ। পরে সেই টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে পাঠাতেন।
আরও পড়ুন:
চার্জশিটে ইডির আরও দাবি, কানাডা, মালয়েশিয়া, কম্বডিয়ার মতো দেশে ভ্রমণের জন্য ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের জন্য ভুয়ো পাসপোর্ট এবং ভিসা তৈরির চক্রের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে জড়িত ছিলেন আজাদ। ভুয়ো পাসপোর্ট এবং ভিসা বানিয়ে দেওয়ার জন্য টাকা নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নিতেন তিনি। তবে কোনও কোনও সময়ে টাকা লেনদেনের জন্য সহযোগীদেরও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতেন আজাদ। বিদেশি মুদ্রা বিক্রি চক্রের সঙ্গে তাঁর যোগ মিলেছে বলেও চার্জশিটে দাবি করল ইডি।
ভুয়ো পাসপোর্টের অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে গ্রেফতার আজাদ মল্লিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে গত সপ্তাহে। আজাদ পাকিস্তানি বলে দাবি ইডির। ওঁর মোবাইল থেকে পাকিস্তানের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গিয়েছে।