Advertisement
E-Paper

লালু থেকে বালু! পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির দুই ‘মহারথী’ জড়িয়ে রেশন দুর্নীতিতেও, এমনই দাবি করছে ইডি সূত্র

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, পশুখাদ্য ‘দুর্নীতি’র মূল দুই অভিযুক্ত জড়িয়ে পড়েছেন রেশন ‘দুর্নীতি’তেও। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা ধৃত রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ ও।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:৩৯
(বাঁ দিকে) লালুপ্রসাদ যাদব এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

(বাঁ দিকে) লালুপ্রসাদ যাদব এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

বাংলার রেশন দুর্নীতি মামলায় ‘বিহার-যোগ’। রেশন বণ্টনে ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে এ বার পড়শি রাজ্যের পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলার যোগসাজশ খুঁজে পেল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, পশুখাদ্য ‘দুর্নীতি’র মূল দুই অভিযুক্ত জড়িয়ে পড়েছেন রেশন ‘দুর্নীতি’তেও। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা রাজ্যের মন্ত্রী ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (রাজ্য-রাজনীতিতে যিনি বালু নামেই বেশি পরিচিত) ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেও দাবি করছে কেন্দ্রীয় সংস্থার সূত্র।

শনিবার সকাল থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত কলকাতায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের একটি ঠিকানায় অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেড নামে একটি প্যাকেটজাত আটা তৈরি সংস্থার দু’টি অফিসে তল্লাশি-অভিযান চালায় ইডি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ওই সংস্থার আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। উলুবেড়িয়ায় ওই সংস্থার আটাকলেও রবিবার দুপুর পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান চলেছে। সেখান থেকেও গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে। ইডির একটি সূত্রের দাবি, এই অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেডের দুই ডিরেক্টর দীপেশ চন্দক ও হিতেশ চন্দক ১৯৯৬ সালে বিহারের পশু খাদ্য দুর্নীতি মামলার প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরে ওই মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে তাঁরা ছাড়া পেয়ে যান। দীপেশই বয়ান দেন যে, তিনি লালুপ্রসাদ যাদবকে ৬০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন।

ইডির ওই সূত্রেরই দাবি, দীপেশ ও হিতেশও বালুর ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের দুই আপ্তসহায়ক অমিত দে এবং অভিজিৎ দাসের সঙ্গেও সংস্থাটির ডিরেক্টরদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া বাকিবুর রহমানের চালকলের মতো অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেডেরও নাম রয়েছে খাদ্য দফতরের প্যানেলে। ভারতীয় খাদ্য নিগমের (এফসিআই বা ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া) রেশনের গম ভাঙানোর জন্য খাদ্য দফতরের বরাত পেত এই সংস্থা। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রেশনের ভাল গুণমানের গম ওই সংস্থাকে সরবরাহ করা হত। রেশনের ন্যায্য মূল্যের গম খোলা বাজারের দামের থেকে অনেকটা কম দরে বিক্রি করা হত ওই সংস্থাকে। বাজারদরের তুলনায় কম দামে সেই গম কিনে আটাকলে তা থেকে আটা তৈরি করে প্যাকেটজাত করে পরে বাজারে বিক্রি করা হত বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার সূত্র।

ইডি-র গোয়েন্দাদের সূত্রের দাবি, জ্যোতিপ্রিয়-ঘনিষ্ঠ এই ধরনের আরও কিছু সংস্থা রয়েছে। রেশন বণ্টন দুর্নীতির সিন্ডিকেট অর্থাৎ ডিস্ট্রিবিউটর, ডিলার, রেশন দোকানের মালিক এবং খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের সঙ্গে নাকি সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন বালু। তদন্তকারীদের সূত্রে এ-ও দাবি করা হচ্ছে, গত দু’মাস ধরে বিভিন্ন জায়গায় রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলার সূত্রে তল্লাশি-অভিযানে বাজেয়াপ্ত নথি যাচাই করে জানা গিয়েছে, দুর্নীতির কোটি-কোটি টাকার একটি বড় অংশ জ্যোতিপ্রিয়ের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হত। মন্ত্রীর দুই আপ্তসহায়ককেও প্রায় পাঁচ থেকে ছ’দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। তাঁদের বয়ান লেখা হয়েছে। ওই দু’জনের বাড়ি থেকেও উদ্ধার হওয়া নথি যাচাই করা হয়েছে। ইডি সূত্রের দাবি, সেই সব নথি যাচাই করতে গিয়েই অঙ্কিত ইন্ডিয়া লিমিটেডের দুই ‘মহারথী’ দীপেশ ও হিতেশের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়ের যোগাযোগের বিষয়টি জানা গিয়েছে।

Ration Scam Jyotipriya Mallick Fodder Scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy