Advertisement
E-Paper

সারদা রিপোর্ট পেশে আরও সময় চায় ইডি

সিবিআই চূড়ান্ত সারদা-রিপোর্ট না-দেওয়ায় তাদেরও চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা যাচ্ছে না বলে আদালতে জানিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩২

তদন্তের কেন্দ্রীয় সংস্থা দু’টিই। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় উভয়েই তদন্ত করছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের কারও চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়েনি। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিলম্বের জন্য একটি সংস্থার দিকে আঙুল তুলছে অন্যটি।

সিবিআই চূড়ান্ত সারদা-রিপোর্ট না-দেওয়ায় তাদেরও চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা যাচ্ছে না বলে আদালতে জানিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গত সপ্তাহে বিচার ভবনে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে সারদা মামলায় ইডি-র তদন্তকারী অফিসার অক্ষয় সিংহ চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশের জন্য আরও খানিকটা সময় প্রার্থনা করেন। সেই সঙ্গেই নিজেদের দেরির জন্য তিনি সিবিআই-কে দায়ী করেন বলে জানাচ্ছেন আইনজীবীদের একাংশ। ৩ জানুয়ারি ইডি-র তদন্তকারীকে সারদা মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই ৩১ জানুয়ারি আদালতে নালিশ জানান ইডি-র তদন্তকারী অফিসারেরা।

অবিশ্বাস্য হারে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে আমজনতার কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে সারদা লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে। অন্য অনেক বেআইনি লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধেই প্রতারণার মামলা চলছে। কিন্তু সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে দেশ জুড়ে যে-ভাবে তোলপাড় চলেছিল, তার তুলনা বেশি নেই। ২০১৩-র এপ্রিলে কেলেঙ্কারি ধরা পড়ে আর তার পরের বছর সিবিআই-কে তদন্তভার দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু চূড়ান্ত তদন্ত-রিপোর্ট দিতে পারেনি সিবিআই। কেন?

সিবিআই সূত্রের খবর, সারদার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়েছিল। তার মধ্যে একটি মামলায় (আর-সি ৫) বিধাননগর মহকুমা আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করেছে তারা। সেটিতে শুধু সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। সিবিআইয়ের এক আধিকারিক জানান, কিছু মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

অভিযুক্ত সুদীপ্ত, দেবযানী, কুণাল ঘোষেদের জেরা করে প্রচুর নাম পেয়েছে সিবিআই। তবে সারদার নয়ছয়ে এখনও তাঁদের সকলের যোগসাজশ প্রমাণিত হয়নি বলে জানান এক সিবিআই-কর্তা। তিনি জানান, সারদা-তদন্তের শুরুতে রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর দুই কর্তা রাজীব কুমার ও অর্ণব ঘোষের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু ওই দু’জনকেও এখনও জেরা করা যায়নি। ডেকে পাঠানো সত্ত্বেও হাজির হননি রাজীব। অর্ণবকে এখনও ডাকাই হয়নি। ফলে তদন্ত পুরোপুরি গুটিয়ে ফেলা যাচ্ছে না। চলতি বছরের শেষ দিকে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশের আগে তাই আরও অন্তত দু’বার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করা হতে পারে ইঙ্গিত দিয়েছেন সিবিআইয়ের কর্তারা।

আদালতে ইডি জানিয়েছে, সারদার দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুরে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সারদার কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। অভিনেতা ও প্রাক্তন সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী সারদার কাছ থেকে নেওয়া টাকা ইডি-তে জমা দিয়েছেন। মাতঙ্গ ও মনোরঞ্জনা সিংহের মোট ৬৩ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সুদীপ্ত, দেবযানী-সহ কয়েক জন অভিযুক্তের বয়ান নেওয়া হয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র-সহ সারদা কাণ্ডে ধৃত অন্য কয়েক জন অভিযুক্তেরও বয়ান নেওয়া হয়েছে। তার পরেও তাঁদের চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করা যাচ্ছে না। কেননা সিবিআই চূড়ান্ত রিপোর্ট না-দিলে সেটা সম্ভব নয় বলে জানান ইডি-র তদন্তকারী অফিসার।

কেন সম্ভব নয়? ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেন, ‘‘সারদা-কাণ্ডে মূল মামলা করেছে সিবিআই। একে একে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার পরে তাদের হেফাজত থেকে অভিযুক্তদের নিজের হেফাজতে নেয় ইডি। ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ী মূল মামলাকারীর তরফে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশের আগে তদন্তে সহযোগী সংস্থা চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করতে পারে না। সেই জন্যই বিচারকের কাছে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।’’

Chit Fund সারদা গোষ্ঠী CBI Saradha Scam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy