Advertisement
E-Paper

পুলিশ ঠুঁটো, বিদ্যুৎ চোরের পোয়াবারো

সারা রাজ্যে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে বণ্টন সংস্থা প্রতি মাসে গড়ে ৫৫০-৬০০ এফআইআর দায়ের করে। গ্রীষ্মে সংখ্যাটা বাড়ে।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০৫:৪২
ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

বিদ্যুৎ চুরি করে ধরা পড়ছে। থানায় এফআইআর-ও হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অন্দরে। সম্প্রতি ক্ষতি কমিয়ে আয় বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনি ব্যবস্থা না-নিলে রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব নয় বলে বিদ্যুৎকর্তাদের অভিমত। পুরো বিষয়টি জানিয়ে আগামী সপ্তাহে রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্রকে রিপোর্ট দিতে চলেছে বিদ্যুৎ দফতর।

সারা রাজ্যে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে বণ্টন সংস্থা প্রতি মাসে গড়ে ৫৫০-৬০০ এফআইআর দায়ের করে। গ্রীষ্মে সংখ্যাটা বাড়ে। ক্ষতিপূরণ বাবদ অভিযুক্তদের কাছে বছরে কমবেশি ১২০-১৫০ কোটি টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই টাকার পুরোটা আদায় হয় না। আর গ্রেফতার যা-হয়, তা এফআইআরের সংখ্যার তুলনায় নগণ্য বলে বিদ্যুৎ শিবিরের দাবি।

বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, বিভিন্ন মহল থেকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে তিনিও অভিযোগ পেয়েছেন। উপযুক্ত জায়গায় প্রসঙ্গটি তুলবেন তিনি।

বিল আদায় ঠিকমতো না-হওয়া, বিদ্যুৎ চুরি ইত্যাদি কারণে বণ্টন সংস্থার আয় খরচের তুলনায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। চরম সমস্যায় রয়েছে সংস্থাটি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মুখ্যসচিবকে মাথায় রেখে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির কাছেও পরে একটি রিপোর্ট দেওয়া হবে।

কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, ২০১১ সালে উত্তর ২৪ পরগনার মগরাহাটে হুকিং কাটতে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে প্রশাসনের নির্দেশেই পুলিশ হুকিং-বিরোধী অভিযানে কার্যত যেতে রাজি হয় না। মগরাহাটে এখনও বিদ্যুৎ বিক্রি করে বণ্টন সংস্থার গড়ে ৮০ শতাংশ ক্ষতি হয়। অর্থাৎ ১০০ টাকার বিদ্যুৎ দিয়ে ঘরে আসে মাত্র ২০ টাকা, ৮০ টাকাই চুরির খাতায়!

প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করাই পুলিশের মূল কাজ। বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ এলে পুলিশ প্রয়োজনমতো ব্যবস্থাও নেয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিচারবিবেচনা করাটাও জরুরি হয়ে পড়ে। কলকাতা লাগোয়া কয়েকটি জেলার পুলিশকর্তাদের দাবি, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁরা ব্যবস্থা নেন। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হয়।

বিদ্যুৎ চুরি নিয়ে এফআইআর সব থেকে বেশি হয় মুর্শিদাবাদ, মালদহ, বীরভূম, দুই বর্ধমান, মেদিনীপুরের বেশ কিছু অঞ্চল এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সম্প্রতি বিদ্যুৎ চুরি ও পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন বেশ কিছু কর্তা। এক বিদ্যুৎকর্তা জানান, ২০০৩ সালে দেশের বিদ্যুৎ আইনে সব রাজ্যকে বিদ্যুৎ চুরি রুখতে পৃথক পুলিশবাহিনী ও পৃথক আদালত গড়তে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও রাজ্যই তা গড়ে তোলেনি। ফলে দেশের কোথাও চুরি ঠেকানোর রক্ষাকবচ বলতে বিদ্যুৎকর্তাদের হাতে কার্যত কিছুই নেই বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিল্প মহলের একাংশ।

Electricity theft Police State Government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy