Advertisement
E-Paper

শান্তশিষ্ট ‘ভদ্রলোক’ মেরে টুকরো করছে দেহ, কী করে সম্ভব?

ছোট ছোট নানা ঘটনা ঘটিয়ে এক দিন তারা এমন একটা বড় কিছু করে ফেলে। এ জন্য তাদের কোনও অনুশোচনা বোধও কাজ করে না।

কেদার বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:৫২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

একটা ঘটনা ঘটলেই, অতীতের গুলোও যেন চোখের সামনে চলে আসে। বেনাচিতির বাক্সবন্দি দেহ উদ্ধারের কথা শুনে তাই বহু চর্চিত একাধিক খুনের ঘটনা মনে পড়ল। কোনও ক্ষেত্রেই অপরাধী পেশাদার খুনি নয়। অথচ যে ভাবে সে খুন করেছে বা খুনের পর দেহ লোপাট করার চেষ্টা করেছে— তা এক কথায় রোমহর্ষক হলিউডি ছবিকেও হার মানাবে অনায়াসে। ঝানু গোয়েন্দারাও নাকানিচোবানি খেয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে। অনেক মামলার সমাধানও হয়নি।

অথচ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই খুনিদের কোনও অতীত অপরাধ নেই। কর্মস্থলেও তাদের বেশ সুনাম। পরিবারের বাকি সদস্য বা সামাজিক ভাবেও সে যথেষ্ট মিশুকে। কিন্তু, হঠাৎ এক দিন জানা গেল মানুষটি খুন করেছে। শুধু তাই নয়, খুনের পর সেই দেহ টুকরো টুকরো করে কেটেছে। দেহ লোপাটের জন্য টুকরোগুলি ব্যাগ বা সুটকেসে ভরেছে। শেষে ধরাও পড়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে খুনিরা নিজের ভীষণ কাছের মানুষকেই সরিয়ে দিয়েছে দুনিয়া থেকে।

সব কিছুর পর প্রশ্ন থেকেই যায়, পেশাদার না হয়েও এত ঠান্ডা মাথায় কী ভাবে খুন করে মানুষ? এতটা নৃশংস কী ভাবে হতে পারে তারা?

আরও পড়ুন: সুটকেসে তরুণীর দেহ, দুর্গাপুরে আটক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার

আসলে এমনিতেই কিছু মানুষ স্বভাবগত ভাবে অতি নৃশংস হয়। সেটাই তার মানসিক অবস্থা। এটাকে বলে অ্যান্টিসোশ্যাল পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার। তবে, এক দিনে এটা তৈরি হয় না। একেবারে ছোটবেলা থেকেই মানে ৫-৬ বছর বয়স থেকেই এটা তাদের ভিতর তৈরি হয়। ছোট ছোট নানা ঘটনা ঘটিয়ে এক দিন তারা এমন একটা বড় কিছু করে ফেলে। এ জন্য তাদের কোনও অনুশোচনা বোধও কাজ করে না।

আরও পড়ুন: শিউরে দেওয়া আটটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড

অথচ, বাইরে থেকে তাদের দেখে কিছু বোঝার উপায় থাকে না। কাজের জায়গাতেও তারা প্রবল জনপ্রিয়। কাজের ক্ষেত্রেও কোনও প্রভাব নেই। সুনামের সঙ্গেই তারা কাজ করে। কিন্তু, ভিতরে ভিতরে তাদের ওই বোধটা কাজ করে যায়। তবে এই সব অপরাধীদের পুরনো জীবন ঘাঁটলে দেখা যাবে, অতীতে এমন ধরনের ছোটখাটো ‘নৃশংস’ কাজ তারা করেছে। আসলে ওগুলো দিয়েই হাত পাকিয়েছে। এবং কোনও ক্ষেত্রেই এদের এমন কাজ করার পর কোনও আফসোস হয় না। খুন করার পরেও না। এমনকী ধরা পড়ার পরেও নয়।

অ্যান্টিসোশ্যাল পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার কিন্তু এক দিনে হয় না। প্রথমে অর্থাৎ খুব কম বয়সে তাদের অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দেয়। আর একটু বড় হলে সেটাই কনডাক্ট ডিজঅর্ডারের চেহারা নেয়। এগুলোর কোনওটাই কিন্তু স্বাভাবিক আচরণের মধ্যে পড়ে না।

এ ক্ষেত্রে একটা কথা ভীষণ প্রয়োজনীয় বলে মনে হচ্ছে। একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আমরা চেঁচামেচি করি। কিন্তু, আমরা যদি ছোটবেলা থেকে আমাদের বাচ্চাদের উপর নজর রাখি, তা হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখে দেওয়া যাবে। বাচ্চাদের আচরণ ভাল করে খেয়াল করে আমরা যদি তাদের নিয়ে একটু বিশ্লেষণ করি, অস্বাভাবিক ঠেকলে মনোবিদের সঙ্গে পরামর্শ করি, তা হলেই কিন্তু এটা শুধরে ফেলা যায়। কারণ, পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার বা আচরণের অস্বাভাবিকতা কিন্তু ছোট থেকে দেখভাল করলে সারিয়ে তোলা যায়।

Crime Murder Violence Human Psychology কেদার বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy