Advertisement
E-Paper

পুজোয় ঋতুবদল চেয়ে হেনস্থা শিল্পীর

একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন। তার ওপর একটি রক্তলেপা পদ্মফুল। তাকে ঘিরে চালচিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:০৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন। তার ওপর একটি রক্তলেপা পদ্মফুল। তাকে ঘিরে চালচিত্র।

এমনই একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন শিল্পী অনিকেত মিত্র। গত সপ্তাহে ওই পোস্ট করা ইস্তক মহা বিপদে পড়েছেন তিনি! কারণ এই ছবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এই ছবি দিয়ে দেবী দুর্গার অপমান করেছেন অনিকেত। শুধু ‘কমেন্ট’ করে প্রতিবাদ নয়। অনেকে অনিকেতকে ধর্মদ্রোহী, দেশদ্রোহী আখ্যাও দিয়ে বসেছেন! অনেকে কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে গিয়ে নালিশ ঠুকে এসেছেন।

এত হইচইয়ের মধ্যে পোস্ট করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনিকেত ছবিটি সরিয়েও ফেলেছিলেন। কিন্তু তত ক্ষণে কয়েক হাজার শেয়ার হয়ে গিয়েছে ছবি। অনেকে আগেই ‘সেভ’ করে নিয়েছেন। ফলে তা নতুন করে পোস্ট করে অনিকেতের মুণ্ডপাত চলছেই! যাঁরা অনিকেতের পক্ষ নিয়ে কিছু বলছেন, তাঁদেরও আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

যখন ৫৩ বছরের পুরনো প্রথা বাতিল করে সব বয়সের মহিলাদের জন্য শবরীমালা মন্দিরের দরজা খুলে দিচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট, তখন অনিকেতের ছবি নিয়ে প্রতিবাদ কেন? বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য, ‘‘এই ছবি দুর্গার অবমাননা, মহিলাদের অবমাননা!’’

অনিকেত কী বলছেন? মঙ্গলবার তিনি আনন্দবাজারকে জানালেন, এই ছবি আঁকার পিছনে ধর্মীয় অবমাননা তো দূর, কারও প্রতি অবমাননার অভিপ্রায় তাঁর ছিল না। সারা জীবন বাড়িতে স্ত্রী-বোনকে দেখেছেন, পুজোর সময় ঋতুস্রাব হলে পুজোর আচার থেকে তাঁরা নিজেদের সরিয়ে নেন! ঋতুস্রাবের জন্য পুজোর চারদিন কত মেয়ে উৎসবে অংশই নেন না! সম্প্রতি শবরীমালা রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলছে, ঋতুস্রাবের জন্য পুজোয় অংশ নিতে না দেওয়া মানে অস্পৃশ্যতার সমতুল্য একটি কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দেওয়া। অনিকেত চেয়েছিলেন এই ছবির মাধ্যমে সেই সচেতনতাকেই ছড়িয়ে দিতে! অথচ ফল হয়েছে উল্টো!

অনিকেতের কথায়, ‘‘পুজো উদ্যোক্তারা তো তাঁদের ফার্স্ট এড বক্সে স্যানিটারি ন্যাপকিন রাখার কথা ভাবতে পারেন। পুজো দেখতে গিয়ে মহিলাদের কাজে লাগতে পারে। কিন্তু ছবিটা নিয়ে এ ধরনের বার্তা কেউ বুঝল বলেই মনে হয় না।’’ ঘটনাটি শুনে লেখক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়িও বললেন, ‘‘শিল্পী যে বার্তা দিতে চেয়েছেন, সেটা দেখা যাচ্ছে মানুষের কাছে পৌঁছয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের মানুষ রয়েছেন। এই ধরনের ভাবনা বাছাই দর্শকের জন্যই উপযুক্ত বলে মনে হয়।’’

নারী আন্দোলনের কর্মী, অধ্যাপিকা শাশ্বতী ঘোষ অনিকেতের এই ভাবে অনলাইনে আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদ করে বললেন, ‘‘দুর্গাপুজোর আসল উদ্দেশ্য ছিল জমির উর্বরতা বাড়ানো। ঘট পেতে আর নবপত্রিকা দিয়ে পুজো হত। ঋতুমতী মহিলা মানে তিনি উর্বর। এর সঙ্গে পুজোর সংঘাত তো নেই, বরং যোগ আছে।’’

Aniket Mitra Menstruation অনিকেত মিত্র Facebook ফেসবুক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy