Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Sitalkuchi

Sitalkuchi Shootout: দোষীরা কবে শাস্তি পাবে, পথ চেয়ে অপেক্ষায় নুর আলম-আনন্দ বর্মণের পরিবার

পুলিশের হাত থেকে সিবিআইয়ের হাতে চলে গিয়েছে আনন্দ বর্মণ খুনের মামলা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছে সিবিআই। আনন্দর মা বাসন্তী বর্মণ বলেন, “দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া হোক, তাহলে খুশি হব আমরা।”

শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়লেন হামিদুলের স্ত্রী আসিমা বিবি। নিজস্ব চিত্র

শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়লেন হামিদুলের স্ত্রী আসিমা বিবি। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ , উৎপল অধিকারী
পাঠানটুলি (শীতলখুচি), জোড়পাটকি শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৩
Share: Save:

এক বছরেও শোক একই রকম রয়ে গিয়েছে জোড়পাটকি এবং পাঠানটুলিতে। জোড়পাটকিতে কোনও নিহতের বাবা আজও কবরের পাশে বসে ছেলের সঙ্গে কথা বলেন। অপেক্ষা করেন, কবে শাস্তি পাবে দোষীরা। পাঠানটুলিতেও আনন্দ বর্মণের পরিবার অপেক্ষা করে আছে, কবে সিবিআই ধরবে মূল অভিযুক্তদের।

রবিবার যখন রাজ্যের শাসকদলের তৈরি শহিদ বেদির সামনে যান নুর আলম হোসেনের বাবা জবেদ আলি, তাঁর চোখ দিয়ে অবিরত জল গড়িয়ে পড়ছিল। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন নুর আলমের মা জোবেদা বিবি। ওঁরা বললেন, “ছেলেটার কথা খুব মনে হয়। বার বার ওকে খুঁজে বেড়াই। খুঁজে আর পাই না।” আনন্দের মা বাসন্তী বর্মণও ছেলের কথা তুলতেই কাঁদতে শুরু করেন। তিনি বলেন, “ছেলেটাকে যারা খুন করল, তারা কেউই তো ধরা পড়ছে না, কেন?”

গত বছরের ১০ এপ্রিল বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলখুচি বিধানসভার জোড়পাটকির আমতলি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের বুথের সামনে সিআইএসএফের গুলিতে নিহত হন গ্রামের চার যুবক হামিদুল মিয়াঁ, মনিরুজ্জামান মিয়াঁ, সামিউল হক এবং নুর আলম হোসেন। সে দিন পুত্রশোকে জ্ঞান হারান হামিদুলের বাবা দিল মহম্মদ। ছ’মাসের মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁর।

নুরের বাবা জবেদ ভ্যান চালক। সকাল হলেই ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। কখনও ভ্যান রাস্তায় রেখে ছেলের কবরের কাছে গিয়ে একা একা বিড়বিড় করেন। মনিরুজ্জামানের বাবা আমজাদ হোসেন সেই যে বাকরুদ্ধ হয়েছেন, এখনও দুটো-একটা কথা বলেন। সে দিন ছেলের মৃত্যুর পরে ডুকরে কেঁদে ওঠা সামিউলের বাবা আফসার আলি মিয়াঁ বলেন, “এক বছর হয়ে গেল। অভিযুক্তেরা শাস্তি পেল না কেন, সেটাই জানতে চাই।”

মনিরুজ্জামান ভিন্‌রাজ্যে কাজ করতেন। ঘটনার দিন দুয়েক আগেই বাড়ি ফেরেন। দেড় মাসের কন্যার সঙ্গে সেই এক বারই দেখা হয়েছিল তাঁর। তাঁর স্ত্রী রাহেলা বিবি বলেন, “মেয়েটা বড় হচ্ছে, অথচ বাবাকে কাছে পাচ্ছে না।” হামিদুলের স্ত্রী আসিমা বিবি, সাড়ে চার বছরের কন্যা হাসিনা খাতুন, দশ মাসের ছেলে হাসিবুল এক-বুক শোক নিয়ে রয়েছে। আসিমা কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। শুধু কাঁদেন।

পাঠানটুলিতে ওই দিন সকালে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন আনন্দ বর্মণ। তাঁর পরিবার বারে বারে প্রশ্ন তুলছে, “এক বছর তো হয়ে গেল, অপরাধীরা কেউ গ্রেফতার হল না?” কেউ কি তাদের আড়াল করছে? আনন্দের দাদু মনোরঞ্জন বলেন, “সকলেই তো ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ গ্রেফতার হচ্ছে না।” পুলিশের হাত থেকে সিবিআইয়ের হাতে চলে গিয়েছে আনন্দ বর্মণ খুনের মামলা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছে সিবিআই। আনন্দর মা বাসন্তী বর্মণ বলেন, “দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া হোক, তাহলে খুশি হব আমরা।”

১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সিবিআই তদন্ত করছে। কিন্তু গ্রেফতার হচ্ছে না কেউ। আর তা নিয়েই ক্ষোভ ছড়িয়ে এলাকা জুড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sitalkuchi WB assembly Election2021 Shootout
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE