Advertisement
E-Paper

বাবা নারাজ, দিদিমার আশ্রয়ে পদক জয়, মেয়ে দিচ্ছে পরীক্ষাও

মেয়ে তার মাসির বাড়িতে থাকুক, এটাও পছন্দ নয় বাবার।

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বাবা চান না, মেয়ে যোগব্যায়ামের জন্য ঘুরে ঘুরে পুরস্কার আনুক। তাই যোগ প্রশিক্ষকের কাছে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়ের জেদের কাছে হার মানতে হয় বাবাকে। বাড়ি ছেড়ে দিদিমার বাড়িতে মাসির কাছে আশ্রয় নিয়ে জাতীয় স্তরে মহারাষ্ট্রে গিয়ে মেয়ে জিতে এল রুপোর পদক। ঘটনাটি ঘটিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের শ্রীপল্লি এলাকার কিশোরী তৃণা (নাম পরিবর্তিত)।

মেয়ে তার মাসির বাড়িতে থাকুক, এটাও পছন্দ নয় বাবার। তাই মেয়েকে ফিরে পেতে স্কুল থেকে তার মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড তুলে আনেন তিনি। মেয়ে তা জানতে পেরে হাজির হয় শিশু কল্যাণ সমিতির কাছে। পূর্ব বর্ধমান শিশু কল্যাণ সমিতির তৎপরতায় স্কুল ‘ডুপ্লিকেট’ অ্যাডমিট কার্ডের ব্যবস্থা করেছে। পরীক্ষায় বসতে চলেছে তৃণা।

ঘটনার সূত্রপাত জানুয়ারির মাঝামাঝি। মেয়েকে যোগ প্রশিক্ষকের কাছে যেতে দেননি বাবা। অথচ ২৬ জানুয়ারি মহারাষ্ট্রে জাতীয় স্তরে যোগ প্রতিযোগিতা। রাজ্য স্তরে চার বার সোনার পদক জয়ী মেয়ে তাই বাড়ি ছেড়ে চলে যায় পাশের পাড়ায় দিদিমার বাড়িতে, মাসির আশ্রয়ে। কিন্তু বাবার তা পছন্দ হয়নি। মহিলা থানায় নিজের শ্যালিকার বিরুদ্ধে এবং মেয়ের যোগ প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তার ভিত্তিতে পুলিশ গিয়ে মেয়েকে দিদিমার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পূর্ব বর্ধমান শিশু কল্যাণ সমিতিতে নিয়ে যায়। সমিতি সব শুনে নির্দেশ দেয়, মেয়ে হোমে থাকবে। সে যাতে মহারাষ্ট্রে যেতে পারে, তারও ব্যবস্থা করে শিশু কল্যাণ সমিতি। ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মহারাষ্ট্রে গিয়ে জাতীয় যোগ প্রতিযোগিতায় যোগ দেয় এবং রুপোর পদক পায়।

মহারাষ্ট্র থেকে ফেরার পরে কিশোরীর বয়ানের ভিত্তিতে এবং তার মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে তাকে মাসির বাড়িতেই থাকার নির্দেশ দেয় শিশু কল্যাণ সমিতি। কিন্তু সেই ব্যবস্থা পছন্দ হয়নি বাবার। তিনি হাজির হন কলকাতায় মানব পাচার রোধে তৎপর এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে। সেখানেও তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর শ্যালিকা আর যোগ শিক্ষক নিজেদের স্বার্থে মেয়েকে ভুল বুঝিয়ে আটকে রেখেছে। এমনকি মেয়ে তার অ্যাডমিট কার্ডটিও তুলতে পারেনি। তিনি সেটি স্কুল থেকে এনেছেন। মেয়ের ভবিষ্যৎ ভেবে মেয়েকে তাঁর কাছে ফেরানোর ব্যবস্থা করার আবেদন জানান বাবা।

মেয়ের বাবার অভিযোগ শুনে পূর্ব বর্ধমান শিশু কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান লিয়াকত আলি জানান, মেয়ের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এবং তার স্বার্থেই আইন মেনে দিদিমার বাড়িতে মাসির আশ্রয়ে রাখা হয়েছে তাকে। পরীক্ষা শেষ হলে সমিতির সামনে ফের হাজির হবে ওই কিশোরী। তখন বাবা-মাকে ডেকে সব দিক খতিয়ে দেখা হবে।

সমিতির একটি সূত্র জানাচ্ছে, মেয়ের বাবার অভিযোগ ভিত্তিহীন। জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটকে দিয়ে তদন্ত করিয়েই ওই কিশোরীকে মাসির কাছে রাখা হয়েছে। নইলে রাজ্য তথা দেশ এক জন ভাল যোগ প্রতিযোগীকে দেখতে পেত না।

বাবা রবিবার বলেন, ‘‘মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই গিয়েছিলাম। আইন তো জানা ছিল না।’’

Madhyamik Burdwan Yoga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy