অসহায়: বিধায়কের খোঁজে মেদিনীপুরে নিরূপ চক্রবর্তী। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
একমাত্র ছেলের গলায় ক্যানসার। চিকিত্সার জন্য প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। নিজের সামর্থ্য নেই। তাই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অর্থ সাহায্যের আবেদন করতে চান। আবেদনপত্রে স্থানীয় বিধায়কের সই চাই। কিন্তু বিধায়ক তো এলাকায় আসেন না!
অগত্যা বিধায়ক শিউলি সাহার সই পেতে হন্যে হয়ে ঘুরছেন আনন্দপুরের শোলিডিহার বাসিন্দা নিরূপ চক্রবর্তী। কখনও কেশপুরে আসছেন, আবার কখনও ছুটছেন মেদিনীপুর। সামান্য জমি আর চাষবাসের ভরসায় সংসার চালানো নিরূপবাবুর কথায়, ‘‘ফর্মে বিধায়কের সই না করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে জমা দিতে পারব না। ফলে, সমস্যায় পড়েছি।” নিরূপবাবুর ছেলে বছর পনেরোর অপু চক্রবর্তীর ভেলোরে চিকিত্সা চলছে। অর্থের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সাহায্য প্রত্যাশী তিনি। সেই সংক্রান্ত ফর্ম হাতে মঙ্গলবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন নিরূপবাবু। কারণ, এ দিন শহরে তৃণমূলের বৈঠক ছিল। কিন্তু বৈঠকে কেশপুরের বিধায়ক শিউলি আসেনি। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ক্যানসার আক্রান্ত কিশোরের বাবাকে।
কেন এলাকায় যান না বিধায়ক? তৃণমূল সূত্রের খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতেই এই বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় বিবাদের জেরে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব শিউলিকে জানিয়েছিলেন, আপাতত তাঁর কেশপুরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। পরে একবার কেশপুরে গিয়ে তিনি হেনস্থার শিকার হন। এখন আর দলীয় বিধি-নিষেধ নেই। তা হলে কেন এখনও তাঁকে এলাকায় দেখা যায় না? শিউলি বললেন, “নিরাপত্তার বিষয়টি তো দেখতে হবে। এ বার কেশপুর যাব। আশা করি, সমস্যা হবে না।” আপনার একটা সই পেতে হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে ক্যানসার আক্রান্তের বাবাকেও? এ বার বিধায়কের জবাব, “গত সপ্তাহেও মেদিনীপুরে গিয়েছিলাম। ওঁর আবেদনে নিশ্চয়ই সই করে দেব।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রথম থেকেই বিধায়কের সঙ্গে দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের বনিবনা হয়নি। সেই বিবাদের জেরে বিধায়কের কেশপুরে ঢোকার ক্ষেত্রে রাশ টেনেছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে যে আটকে যেতে বসেছে ক্যানসার আক্রান্তের চিকিৎসা? সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘ওই আবেদনে মন্ত্রীর সই হলেও হবে। আমি ওঁকে (ক্যানসার আক্রান্তের বাবাকে) জেলার এক মন্ত্রীর কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এক কাগজে লিখেও দিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy