Advertisement
E-Paper

‘আমি মোমো’, পাল্টা জবাব ‘আমি চাউমিন’!

জলপাইগুড়িতে কাজ করলেও শেফালির বাড়ি গয়েরকাটার প্রধানপাড়ায়। তাঁর দিদি সন্তোষী রায় ধূপগুড়ি থানার কনস্টেবল। কথাবার্তা বিপজ্জনক দিকে গড়ালে শেফালি দিদিকে ফোন করেন। তার পরে সন্তোষীর পরমার্শ মতো +১(৩০৯)৮২২-৫৭৯১ নম্বরটি ব্লক করে দেন। পরে শেফালি বলেন, ‘‘আমি গোটা ঘটনা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে জানিয়েছি। তাঁর পরামর্শ মতোই আইনি পদক্ষেপ করব।’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১০

‘হাই, আই অ্যাম মোমো’। ফোনে এই বার্তা দেখে জলপাইগুড়ি আদালতে নিযুক্ত রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল শেফালি রায় প্রথমে ভেবেছিলেন, কেউ ঠাট্টা করছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেন, ‘আই অ্যাম চাউমিন!’

তার পরেও কিছু ক্ষণ ধরে চলে বার্তালাপ। সেখানে মজাই করছিলেন শেফালি। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরে তিনি বুঝে যান, ব্যাপার ঠিক ততটা মজার নয়। এক সময়ে তিনি কোথায় থাকেন, সেটা জানিয়ে তাঁকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। তার পরেই তিনি গোটা বিষয়টা পুলিশের কাছে জানান।

জলপাইগুড়িতে কাজ করলেও শেফালির বাড়ি গয়েরকাটার প্রধানপাড়ায়। তাঁর দিদি সন্তোষী রায় ধূপগুড়ি থানার কনস্টেবল। কথাবার্তা বিপজ্জনক দিকে গড়ালে শেফালি দিদিকে ফোন করেন। তার পরে সন্তোষীর পরমার্শ মতো +১(৩০৯)৮২২-৫৭৯১ নম্বরটি ব্লক করে দেন। পরে শেফালি বলেন, ‘‘আমি গোটা ঘটনা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে জানিয়েছি। তাঁর পরামর্শ মতোই আইনি পদক্ষেপ করব।’’

কী ভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে শেফালিকে? প্রথমে ‘মোমো’ তাঁকে বলে, ‘চলো আমরা একটা খেলা খেলি। আমি তোমার বিষয়ে সব কিছু জানি।’ জবাবে শেফালি বলেন, ‘ওহ তাই!’ তখন ‘মোমো’ তাঁকে তাঁর নাম এবং পেশার কথা জানায়। জবাবে শেফালি বলেন, ‘ওয়াও মোমো, তুমি সত্যি দারুণ!’ তখন ‘মোমো’ তাঁকে বলে, ‘তুমি এখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়িতে রয়েছে।’ শেফালির জবাব: ‘তাতে কী?’ তার পরে তিনি বলেন, ‘ওহে মোমো, আমি এখন ব্যস্ত। বিদায়।’ তখন ‘মোমো’ বলে, ‘সব জায়গায় আমাদের লোক আছে। তারা তোমায় খুন করবে।’ এর পরেই দিদিকে বিষয়টি জানান শেফালি।

মোমোর ধাক্কা অবশ্য এখানেই শেষ নয়। ধূপগুড়ি সুকান্ত মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মুন আহমেদ রবিবার মোমো-র কাছ থেকে একটি ভিডিয়ো কল পান +১(৫০৬)৫০৩-০৭৭২ নম্বর থেকে। মুনের কথায়, ‘‘কল রিসিভ করতে গিয়ে দেখি ডিপি-তে বিদঘুটে চেহারার এক মহিলা। অনেকটা মোমো-র মতো। তাই আর ফোন ধরিনি।’’ তাঁর পরিবার সোমবার ধূপগুড়ি থানায় এফআইআর করেছে। আবার ফালাকাটা জটেশ্বরের সাহাপাড়ার বাসিন্দা নেহাল হোসেনের কাছে মোমোর কাছ থেকে বাংলায় বার্তা আসে। একাদশ শ্রেণির ছাত্র নেহাল বলে, ‘‘মোমো সব ভাষাই জানে। সে নাকি আমার সম্পর্কেও সব জানে। তাই আমি তার সঙ্গে গেম না খেললে সে আমাকে মেরেও ফেলতে পারে বলে হুমকি দিয়েছে।’’

শুধু উত্তরবঙ্গই নয়, মোমো হানা দিয়েছে দক্ষিণবঙ্গেরও একাধিক জায়গায়। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দেশবন্ধুপল্লির বাসিন্দা পার্থসারথি বিশ্বাস গত শনিবার রাতে মোমো-র বার্তা পান। তাঁর কথায়, ‘‘এর পর রোমান হরফে কিন্তু বাংলায় লেখা ছিল— পার্থ, তুমি কি মোমো চ্যালেঞ্জ খেলবে। সকলের পরামর্শে নম্বরটি ব্লক করে দিই। বর্ধমানের সাইবার সেলেও বিষয়টি জানাই।’’

হুগলির হরিপালের কিঙ্করবাটি কলেজের ছাত্রী মৌপ্রিয়া গঙ্গোপাধ্যায় আবার রবিবার দুপুরে হোয়াটসঅ্যাপ কল পান। তিনি ফোনটি ধরেননি। কারণ, ডিপি-তে মোমোর ছবি। সোমবার তাঁর পরিবার পুলিশে বিষয়টি জানায়। মৌপ্রিয়া বলেন, ‘‘মারণ গেমটি সম্পর্কে আগেই জেনেছিলাম। তাই বড়দের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি পুলিশকে জানাই।’’

Momo Suicide Game Whats app Bravery Constable
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy