Advertisement
E-Paper

চিঁড়ে-গুড়ের প্যাকেট বিলি হচ্ছে পশ্চিমে

বিপদ কাটার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সুবর্ণরেখার জল কূল ছাপিয়ে বিদ্যুত্‌ বেগে বইছে। সেই সঙ্গে নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। নিচু এলাকাগুলি জল থইথই অবস্থা। গোপীবল্লভপুর-১ ও নয়াগ্রাম ব্লকে ধান ও আখের খেত জলমগ্ন। রাস্তার উপর হাঁটু জল। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, বুধবার জলস্তর বিপদসীমার নিচে নেমে গিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তাই এ দিনই গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে দু’টি ত্রাণশিবির বন্ধ করে দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৭
ফুঁসছে সুবর্ণরেখা। নয়াগ্রামের ডাহিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ফুঁসছে সুবর্ণরেখা। নয়াগ্রামের ডাহিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

বিপদ কাটার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সুবর্ণরেখার জল কূল ছাপিয়ে বিদ্যুত্‌ বেগে বইছে। সেই সঙ্গে নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। নিচু এলাকাগুলি জল থইথই অবস্থা। গোপীবল্লভপুর-১ ও নয়াগ্রাম ব্লকে ধান ও আখের খেত জলমগ্ন। রাস্তার উপর হাঁটু জল। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, বুধবার জলস্তর বিপদসীমার নিচে নেমে গিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তাই এ দিনই গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে দু’টি ত্রাণশিবির বন্ধ করে দেওয়া হয়। নয়াগ্রাম ব্লকে আবার বুধবার বিকেল পর্যন্ত কোনও ত্রাণ শিবিরই খোলা হয় নি। যদিও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে গোপীবল্লভপুর ও নয়াগ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রশাসনের উদ্যোগে মাইক-প্রচার করে বাসিন্দাদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, নদী যে কোনও সময় বিপদ সীমা অতিক্রম করতে পারে। বাসিন্দাদের সপরিবারে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
সরকারি তথ্য বলছে, মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার থেকে আড়াই লক্ষ কিউসেক হারে জল ছাড়ার ফলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সুবর্ণরেখা তীরবর্তী এলাকাগুলিতে বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়। পরে অবশ্য জল ছাড়ার হার কমিয়ে ১ লক্ষ ৮০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়। রাতে জল ছাড়ার হার ফের বেড়ে দাঁড়ায় ২ লক্ষ ৬ হাজার কিউসেকে। মঙ্গলবার রাতে প্রবল জলোছ্বাসে গোপীবল্লভপুর-১ ও নয়াগ্রাম ব্লকের গোটা সাতেক গ্রাম জলমগ্ন হয়। তবে বুধবার সকালে গালুডি জলাধার থেকে জল ছাড়ার হার ১ লক্ষ ৭০ হাজার কিউসেকে নামিয়ে আনা হয়। এর ফলে নদী ফুঁসলেও বিধ্বংসী আকার নেয় নি বলে প্রশাসনের দাবি।

মঙ্গলবার রাতে গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের সাতমা, ডোমপাড়া, জালবেন্তি গ্রামের নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়। রাতেই ওই গ্রামগুলির জলবন্দি ৯৪টি পরিবারের ৩৭১ জন সদস্যকে স্থানীয় বাবু ডুমরো হাইস্কুলের অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হয়। অন্যদিকে, জানাঘাঁটি গ্রামের নিচু এলাকায় জল ঢোকায় ওই গ্রামের ৪৮ জন বাসিন্দা স্থানীয় বহুমুখি বন্যাত্রাণ কেন্দ্রে আশ্রয় নেন। এ দিন দুপুরের পর ত্রাণশিবির দু’টি বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যার্তদের হাতে দেওয়া হয়েছে চিঁড়ে আর গুড়ের প্যাকেট।

মঙ্গলবার রাতে নয়াগ্রাম ব্লকের মলম গ্রাম পঞ্চায়েতের শুকদেবপুর, মলম ও যাদবপুর, নরসিংহপুর গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করে। মলম গ্রামের হরিপদ দাস বলেন, ‘‘গ্রামের চারপাশ জলে ডুবে যায়। প্রাণ বাঁচতে পরিবার পরিজন ও গোয়ালের চারটি গরু নিয়ে উঁচু এলাকায় চুনপাড়া গ্রামে এক পরিচিত জনের বাড়ি আশ্রয় নিয়েছি।’’ নয়াগ্রামে সরকারি ত্রাণ শিবির চালু করা নিয়ে প্রশাসনিক গড়িমসির অভিযোগে সরব হয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ। অভিযোগ, যেহেতু মলম গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় বিজেপি রয়েছে, সেই কারণে এখানে সরকারি ত্রাণ শিবির চালু করা হয় নি। ব্লক প্রশাসনের অবশ্য দাবি, নয়াগ্রামের নিচু এলাকায় মঙ্গলবার রাতে জল ঢুকলেও, বুধবার সকালের পরে জল নামতে শুরু করেছিল। তাই ত্রাণ শিবির খোলার প্রয়োজন হয় নি। এই পরিস্থিতিতে ‘পাশে থাকার বার্তা’ দিতে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব। মঙ্গলবার রাতে বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি অর্ধেন্দু পাত্র, ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটির সদস্য সুখেন্দু পাত্র, বিজেপি যুব মোর্চার নেতা সুমন সাহু-রা রাত থেকে এলাকায় চক্কর দিয়ে জলবন্দি লোকজনকে উদ্ধার করে উঁচু এলাকায় পৌঁছে দিয়েছেন। আবার গোপীবল্লভপুরে বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষের নেতৃত্বে দলীয় কর্মীরা উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছেন। অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের একটি স্পিড বোট নয়াগ্রামে এসে পৌঁছেছে।

বিরোধীদের বক্তব্য, “এই সরকারের আমলে সব বিষয়ই ছোট্ট ঘটনা। সেই কারণে বন্যার্তদের আর্তনাদ আড়াল করার জন্যই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে প্রচার করছে প্রশাসন।”

Jhargram Rain flood Dompara jadavpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy