দুর্গাপুজোর পদ্ম কিনতে গিয়ে এ বার একটু হলেও দম ফেলতে পারছেন পুজোকর্তারা। ফুল চাষিরা জানাচ্ছেন, পদ্মের জোগান ভাল হওয়ায় দাম থাকছে নাগালের মধ্যেই। ফুল চাষিরা বলছেন, এক-একটা পদ্ম পনেরো থেকে কুড়ি টাকায় মিলতে পারে। তবে চাপ পড়েছে অন্য ফুলে। পুজোর বাজারে এ বার বেশ চড়া দামে বিকোচ্ছে গাঁদা-সহ অন্যান্য ফুল।
কলকাতার মল্লিকঘাটের ফুল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পদ্মের জোগান ভাল হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ এ বার পুজো সেপ্টেম্বরের শেষে পড়েছে। উপরন্তু এ বার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও সেভাবে বন্যা হয়নি। তাতেও পদ্মের চাষ রক্ষা পেয়েছে। আগের থেকে পদ্মের চাষও বেড়়েছে বলে খবর। ফুল ব্যবসায়ী এবং পদ্মচাষিরা জানান, কিছু জেলায় নিচু জমিতে যেখানে আগে ধান চাষ হত সেখানে এখন অনেকে পদ্মের চাষ করছেন। অন্যান্য বছর রাজ্যে পুজোর সময় পদ্মের জোগান কম থাকলে ওড়িশা থেকে পদ্ম আমদানি করা হত। এ বার তা করতে হয়নি। ফুল চাষিরা বলছেন, ওড়িশায় উৎপন্ন পদ্মের মাপ ছোট। তাই আমদানি করা হলেও ভাল মানের পদ্ম মিলত না। অথচ দাম বেশি পড়ত। এ বার এত ভাল উৎপাদন যে বাংলার পদ্ম অন্যান্য রাজ্যে রফতানি হয়েছে।
বর্ষায় অবশ্য এ বার অন্যান্য ফুলের চাষে ক্ষতি হয়েছে। কোথাও বৃষ্টিতে পাপড়ি নষ্ট হয়েছে, কোথাও ফুলের বাগানে জল জমে গাছের ক্ষতি হয়েছে। সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘পদ্মের যোগান ভাল হলেও গাঁদা, দোপাটি, রজনীগন্ধা, অপরাজিতা-সহ কিছু ফুলের দাম অবশ্য কিছুটা চড়া।’’ তিনি জানান, ঝুরো লাল গাঁদা খুচরো বাজারে কিলো প্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, হলুদ গাঁদা কিলো প্রতি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিন ফুট সাইজের লম্বা লাল গাঁদা ফুলের এক একটি মালা বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। ওই একই মাপের
হলুদ গাঁদার এক-একটি মালা বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। অন্যদিকে দোপাটি ঝুরো দাম ছিল কিলো প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, অপরাজিতা দাম ছিল কিলো প্রতি ৩২৫ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। এক কিলো রজনীগন্ধার দাম ছিল কিলো প্রতি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকার মধ্যে। এক হাজার জবার কুঁড়ির দাম ছিল ৩৩০ টাকার মতো।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)