Advertisement
E-Paper

জঙ্গলমহল উদ্ধারে শুভেন্দু, দায়িত্বে বিরবাহাও

শুভেন্দু বা সুকুমারের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিরবাহা বলেন, ‘‘নেত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। জঙ্গলমহলের শান্তি, সুস্থিতি ও উন্নয়নই আমাদের মূল লক্ষ্য।’’ 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ০০:৪৪
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

দলের মহাসচিব পারেননি। এ বার জঙ্গলমহল পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব ‘পুরনো সেনাপতি’ শুভেন্দু অধিকারীকে সঁপলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে পরাজিত দলীয় প্রার্থী বিরবাহা সরেনকে ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতির দায়িত্ব দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। শনিবার কালীঘাটে দলীয় বৈঠকে ঝাড়গ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদাকে সরিয়ে বিরবাহাকে দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা। পঞ্চায়েতে জঙ্গলমহলে তৃণমূলের খারাপ ফলের পরে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ঝাড়গ্রামে দলীয় পর্যবেক্ষক করেছিলেন মমতা। শুভেন্দুকে সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে শুভেন্দু আগ্রহী হননি। ২০১১-এর বিধানসভা ভোটে জঙ্গলমহলে ঘাসফুল ফোটানোর নায়ক ছিলেন শুভেন্দু। লোকসভায় ভরাডুবির পরে তাঁর উপরই আস্থা রাখছেন নেত্রী।

শুভেন্দু বা সুকুমারের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিরবাহা বলেন, ‘‘নেত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। জঙ্গলমহলের শান্তি, সুস্থিতি ও উন্নয়নই আমাদের মূল লক্ষ্য।’’ আজ রবিবারই ঝাড়গ্রামে এসে কাজ শুরু করে দেবেন বিরবাহা। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীও বিরবাহাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আশা করব, উনি জঙ্গলমহলকে সন্ত্রাসমুক্ত রাখার চেষ্টা করবেন। বিরোধী দল হিসাবে আমরা সব সময় সহযোগিতা করব।’’

ঝাড়গ্রামে বিরবাহার পরাজয়ের পিছনে ‘অন্তর্ঘাত’ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে চাপান-উতোর চলছে। দ্বন্দ্বের জেরে সুকুমার গোষ্ঠীর নেতারা বিজেপিকে অক্সিজেন জুগিয়েছেন বলে খবর। বিজেপির জয়ের পরে বিভিন্ন ব্লকের নেতা-কর্মীরা গেরুয়া শিবিরে যেতে তৈরি বলেও শোনা যাচ্ছে। শনিবার জামবনির এক তৃণমূল নেতা বললেন, ‘‘দলে থেকে অনেক অপমান সহ্য করেছি। পঞ্চায়েত ভোটে আমার দু’জন প্রার্থীকে সুকুমার হাঁসদা গোষ্ঠীর লোকেরা গোঁজ প্রার্থী দিয়ে হারিয়ে দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে সফল ভাবে দায়িত্ব পালনের পরেও জেলা কোর কমিটি থেকে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ব্লকের কোনও বৈঠকে আমাকে ডাকা হত না। অথচ আমি ব্লকের কার্যকরী সভাপতি। মহাসচিব সব জেনেও চুপ করে ছিলেন।’’ পদ হারানো ঝাড়গ্রামের এক নেতার মতে, ‘‘এখন নেত্রী শুভেন্দুকে দায়িত্ব দিচ্ছেন। এ তো মৃতদেহ কোরামিন দিয়ে বাঁচানোর মতো দুঃসাধ্য দায়িত্ব।’’

দলের একাংশ বলছেন, জেলার দায়িত্ব পাওয়ার পরে পার্থ বার বার ঝাড়গ্রামে এলেও নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের কারণ খোঁজেননি। জেলাস্তরের হাতে গোনা এক-দু’জন নেতা এবং পুলিশ-প্রশাসনের রিপোর্টকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোটে বিপর্যয়ের পরে ঝাড়গ্রামের ৮টি ব্লকের মধ্যে ৬ জন সভাপতিকে সরিয়ে দেন মমতা। পরে পার্থ আরও দুই ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে সুকুমার ঘনিষ্ঠদের দায়িত্ব দেন। এই প্রাক্তনীদের কয়েকজন গোপনে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন বলেই খবর। লোকসভার ফল বলছে, জেলার ৮টি ব্লকের মধ্যে বেলপাহাড়ি বাদে বাকি সাতটি ব্লকেই বিজেপি লিড পেয়েছে।

তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলেরই কিছু নেতা একতরফা বিজেপি-র ঘরে ভোট ভরানোর ব্যবস্থা করেছেন। ফলে মার্জিন কম হলেও হারতে হয়েছে বিরবাহাকে। গত ৫ মে নরেন্দ্র মোদীর সভার আগের রাতে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। রাজবাড়ির অতিথিশালায় উঠেছিলেন তিনি। যদিও মুকুলের নামে কোনও বুকিংই ছিল না। তা নিয়েও গুঞ্জন চলছে। কারণ, রাজ পরিবারের সদস্য দুর্গেশ মল্লদেব তৃণমূলের জেলা নেতা, ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন পুরপ্রধান। রাজ পরিবারের আরেক সদস্য জয়দীপ মল্লদেব অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের অতিথিশালায় যে কেউ বুকিং করতে পারেন। তবে ওই দিন ঝাড়গ্রামের একটি পর্যটন সংস্থার মাধ্যমে ‘সুপার-ডিল্যাক্স’ ঘর বুক করা হয়েছিল। মুকুলবাবু কয়েকঘন্টার জন্য এসে বিশ্রাম নিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা কয়েকজন বিজেপি কর্মী বাদে মুকুলবাবুর সঙ্গে আর কাউকে সেদিন দেখিনি।’’

Election Results 2019 Lok Sabha Election 2019 TMC Suvendu Adhikari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy