একটি অনুষ্ঠানে নাচলে মিলবে এক হাজার টাকা। কিন্তু সোমবার, দোলের দিন গঙ্গায় ভেসেল চলাচল বন্ধ। তাই বজবজ থেকে মেচেদার অনুষ্ঠানে পৌঁছতে কিশোরী প্রিয়াঙ্কা পাইক কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছিল এক নৌকায়। জানত না, নৌকা ফুটো। জানত না, মাঝি পরিচয় দিয়ে পানোন্মত্ত যে-দুই ব্যক্তি তাদের নৌকায় তুলেছিল, তারা মাঝিই নয়! মাঝগঙ্গায় ডুবল নৌকা। তলিয়ে গেল প্রিয়াঙ্কা। তার বন্ধুদের উদ্ধার করেন পাশের কয়েকটি নৌকার মাঝিরা।
বাউড়িয়ায় ওই নৌকাডুবির ঘটনায় চন্দ্রনাথ মণ্ডল ও লক্ষ্মীনারায়ণ বাগ নামে দুই মাঝিকে সোমবার বজবজে গ্রেফতার করা হয়। তাদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে উলুবেড়িয়া আদালত। প্রিয়াঙ্কারা ন’জন উঠেছিল নৌকায়। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ওই কিশোরীকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায় হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ।
পুলিশি সূত্রের খবর, ফুটো নৌকাটিকে ঘাটের পাশে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এক দল ছেলেমেয়ে নৌকার খোঁজ করায় দুই পানোন্মত্ত ব্যক্তি নিজেদের মাঝি পরিচয় দিয়ে সেটি ভাড়া দেয়। তাতেই বিপত্তি। পরে ওই নৌকার আসল মালিকের খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। তৃষা দাস নামে প্রিয়াঙ্কার এক বান্ধবী জানায়, সোমবার ভেসেল চলাচল বন্ধ থাকায় তারা মেদিনীপুর যাত্রা নাকচ করে দিয়েছিল। কিন্তু আয়োজকেরা জানান, অনুষ্ঠান বাতিল করা সম্ভব নয়। তখন তারা নৌকা খুঁজতে থাকে। দু’টো লোক মাথাপিছু ৩০ টাকা ভাড়ায় নৌকায় বাউড়িয়ায় পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কিছু পরেই ফুটো দিয়ে জল উঠতে থাকে নৌকায়। জল তুলে ফেলার জন্য তৃষারা বার বার অনুরোধ করেছিল মাঝিদের। তারা শোনেনি। নৌকাটি ধীরে ধীরে ডুবে যায়। কেউই সাঁতার জানত না। তৃষা জানায়, নৌকা ডুবতে থাকায় মত্ত দুই ব্যক্তি পালিয়ে যায়। ওই দু’জন যে আদৌ মাঝি নয়, সেটা পরে বুঝতে পেরেছিল তারা। আমান মল্লিক ও শেখ আরবাজ নামে তৃষাদের দুই বন্ধু পাশের নৌকার মাঝিদের সাহায্যে তাদের উদ্ধার করে।