Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

ডেঙ্গি মৃত্যু লিখেছে সরকারি হাসপাতালই

ফলে রাজ্য সরকার ডেঙ্গি তথ্য গোপন করছে বলে বিরোধীদের অভিযোগের সুর আরও চড়া হয়েছে। সরকারি চিকিৎসকদের তৃণমূল বিরোধী সংগঠনের নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকার অপদার্থতা ঢাকতে আদালতেও তথ্য গোপন করছে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৪
Share: Save:

• রত্না দাস: জ্বর নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দেগঙ্গার উত্তর সুবর্ণপুরের ২৫ বছরের এই তরুণী। ২৯ অক্টোবর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে হাসপাতাল মৃত্যুর কারণ লিখেছে ‘ডেঙ্গি হেমারেজিক শক সিন্ড্রোম’।

• সায়েরা বিবি: গত ৩১ অক্টোবর সাগর দত্ত হাসপাতালে মারা গিয়েছেন দেগঙ্গার যাদবপুরের ৪৫ বছরের এই মহিলা। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ লেখা হয়েছে ‘ডেঙ্গি ফিভার’।

• সমাপ্তি মেটে: জ্বর নিয়ে গত ৬ নভেম্বর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ৯ বছরের শিশুটি। সেখানেই ৮ নভেম্বর মারা যায় সে। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ লেখা ‘ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোম’।

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে জমা দেওয়া রিপোর্টে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেছেন, এ দিন পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা ১৯। এর ৩৫ দিন আগে ৪ অক্টোবর দিল্লিতে যে রিপোর্ট পাঠিয়েছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর, তাতেও ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা ১৯-ই বলা হয়েছিল। এই দুই রিপোর্টেই অবশ্য শুধু সরকারি হাসপাতালের মৃত্যুর হিসেব দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ৩০ অক্টোবর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলি থেকে ২৭ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। এটা সরকার মানে না। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

কিন্তু কেন্দ্র ও হাইকোর্টকে দেওয়া রিপোর্ট থেকে এটা স্পষ্ট যে নবান্নের দাবি হল, গত এক মাসের বেশি সময়ে অন্তত সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে এক জনেরও মৃত্যু হয়নি। রত্না দাস, সায়েরা বিবি এবং সমাপ্তি মেটের ডেথ সার্টিফিকেট কিন্তু সে কথা বলছে না। তিন জনেরই মৃত্যু ডেঙ্গিতে হয়েছে বলে শংসাপত্র দিয়েছেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।

ফলে রাজ্য সরকার ডেঙ্গি তথ্য গোপন করছে বলে বিরোধীদের অভিযোগের সুর আরও চড়া হয়েছে। সরকারি চিকিৎসকদের তৃণমূল বিরোধী সংগঠনের নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকার অপদার্থতা ঢাকতে আদালতেও তথ্য গোপন করছে।’’ বিষয়টি নজরে রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকেরও। তারা বার বার বলা সত্ত্বেও ডেঙ্গি নিয়ে আর কোনও রিপোর্ট পাঠাচ্ছে না রাজ্য। মন্ত্রকের একটি সূত্র এ দিন বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের দেওয়া রিপোর্ট দেখে হাইকোর্ট কী বলে, তার উপরে নজর রাখছি।’’ তথ্য গোপনের অভিযোগ নিয়ে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে তদন্তও শুরু হয়েছে বলে খবর।

ডেঙ্গি মৃত্যুতে তথ্যের বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। আমি এ নিয়ে কিছু বলব না। আর আপনারা তো লিখছেনই। লিখে যান না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE