ফাইল চিত্র।
দুর্গোৎসবকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিয়ে যেতে চাইছে রাজ্য সরকার। তাই ‘মানবসভ্যতার বহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থায় (ইউনেস্কো) আর্জি জানিয়েছে তারা।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের মাধ্যমে এই আবেদন পৌঁছে গিয়েছে যথাস্থানে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে এ বার মূল্যায়ন করবেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। মানবসভ্যতার বহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মানদণ্ডে এ-পর্যন্ত গোটা বিশ্বের ছ’টি উৎসবকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো।
প্রাচীন ইতিহাসের গবেষকেরা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুজোর সূচনা কবে, সেই বিষয়ে যথার্থ ঐতিহাসিক প্রমাণ না-মিললেও বৈদিক সাহিত্যে এর উল্লেখ আছে। ঋগ্বেদ, তৈত্তিরীয় আরণ্যক, মৈত্রায়নী সংহিতা, মার্কণ্ডেয় পুরাণে দেবী দুর্গার বিবিধ বর্ণনা পাওয়া যায়। বাংলায় সেই দেবীর প্রভূত বিবর্তন ঘটেছে। পুরাণের দুর্গা হয়ে উঠেছেন বাঙালির ঘরের মেয়ে।
বাঙালির প্রথম দুর্গাপুজোর সঙ্গে মোগল আমলে তাহেরপুরের (অধুনা বাংলাদেশের রাজশাহিতে) জমিদার কংসনারায়ণের নাম জড়িয়ে আছে। কলকাতায় প্রথম দুর্গাপুজো হয় ১৬১০ সালে, বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের হাত ধরে। পশ্চিমবঙ্গে আদিযুগের দুর্গাপুজোর সঙ্গে নদিয়ার ভবানন্দ মজুমদার, মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র থেকে বাঁকুড়ার ভুলাইনিবাসী জগৎরাম রায়— অনেকের নামই জড়িয়ে রয়েছে। গোড়ায় দুর্গোৎসব প্রধানত রাজারাজড়া বা জমিদারদের বিত্ত-কৌলীন্যের স্মারক হয়ে থাকলেও ক্রমশ তা হয়ে উঠেছে সর্বজনীন। তবে কলকাতায় সেই সর্বজনীন বারোয়ারি পুজোর সূচনা ১৯১০ নাগাদ, ভবানীপুরে।
দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে শিল্পনির্ভর অর্থনীতি কী ভাবে বিকশিত হচ্ছে, পর্যটন দফতরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তা জরিপ করেছিল ব্রিটিশ কাউন্সিল। খড়্গপুর আইআইটি-র সঙ্গে লন্ডনের কুইন্স মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা অনুযায়ী, শুধু দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে বছরে ৩২,৩৭৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এক সরকারি কর্তা বলেন, “এই অর্থ রাজ্যের জিডিপি-র ২.৫৮%।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy