ডেঙ্গি রোগীকে মশারির ভিতরে রেখে চলছে চিকিৎসা। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি চিন্তায় রেখেছে স্বাস্থ্য ভবনকে। প্রায় প্রতি দিনই রাজ্যে ২৫০ থেকে ৩০০ জন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হচ্ছেন। মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগে তাই হাল ধরতে চাইছে সরকার। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, জেলায় জেলায় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য এক বা একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। ডেঙ্গি সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা এই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন। অনলাইন মাধ্যমে বা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।
চলতি মরসুমে ডেঙ্গি শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও থাবা বসিয়েছে। দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে রাস্তায় জল জমে থাকছে। সেই জমা জলই আসলে ডেঙ্গিবাহী মশার আঁতুড়ঘর। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামাঞ্চলের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কারণ মূলত দু’টি। এক, ডেঙ্গিমৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। চিকিৎসার পর যত ক্ষণে রোগীকে শহরে ‘রেফার’ করা হচ্ছে, তত ক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। দুই, কোনও কোনও হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অযথা ডেঙ্গি রোগী কলকাতা বা অন্য বড় শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায় নিতে চাইছেন না। এই দুই ‘রোগ’ সারাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। জেলাতেই যাতে ডেঙ্গির চিকিৎসা করানো যায়, রোগীকে শহরে পাঠানোর প্রবণতা যাতে কমে, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা ডেঙ্গি সংক্রান্ত যে কোনও প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং তাঁর পরামর্শে ‘রেফার’ করবেন। কোনও কোনও জেলার সঙ্গে একাধিক বিশেষজ্ঞকেও যুক্ত করা হতে পারে। ডেঙ্গি রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি কী হবে, তাঁর অন্য রোগ থাকলে কী ভাবে তা সারিয়ে তোলা যাবে, সেই বিষয়ে পরামর্শ দেবেন বিশেষজ্ঞেরা। যদি দেখা যায়, রোগীর পরিস্থিতি অতি সঙ্কটজনক, তবে শহরের হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শই দেবেন তাঁরা। কিন্তু যদি দেখা যায়, গ্রামের হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা সম্ভব, তবে ‘রেফার’ করা হবে না। এতে জেলা থেকে কলকাতার হাসপাতালগুলিতে যে চাপ আসছে, তা কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারি ভাবে এখনও রাজ্যের ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বা মৃত্যুর সংখ্যা স্পষ্ট করা হয়নি। বেসরকারি সূত্রে খবর, গত এক সপ্তাহে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৭,৬৭০ জন। বিশেষত, তিনটি জেলার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তিত স্বাস্থ্য ভবন। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদে মোট আটটি এলাকাকে ডেঙ্গি ‘হটস্পট’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বৃষ্টি বাড়লে জমা জলের কারণে ডেঙ্গিও আরও বাড়তে পারে। জেলাশাসকদেরও তা নিয়ে সতর্কও করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy