পশ্চিমবঙ্গের রাজভবনের নাম বদলে দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ‘রাজভবন’ হল ‘লোকভবন’। কলকাতা এবং দার্জিলিং— উভয় ক্ষেত্রেই এই নাম প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে। রাজ্যপালের দফতর থেকে শনিবার এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সঙ্গে একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, রাজ্যপাল নিজেই ‘ভবন’-এর আগের তিন অক্ষর ‘রাজ’ (আর, এ এবং জে) খুলে ফেলছেন। তার পর সেই জায়গায় নতুন তিনটি অক্ষর ‘লোক’ (এল, ও এবং কে) বসাচ্ছেন।
রাজভবনের নাম পরিবর্তন করার নির্দেশ কয়েক দিন আগেই এসেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে। গত ২৫ নভেম্বর নির্দেশ আসার পর শনিবার বাংলায় তা কার্যকর করা হল। রাজ্যপালের দফতর সূত্রে দাবি, পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম রাজভবনের নাম পরিবর্তন করা হল। নিজে উদ্যোগী হয়ে রাজভবনের নাম বদলে ‘লোকভবন’ করলেন রাজ্যপাল বোস। এ বার থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাজভবনকে ওই নামেই চিহ্নিত করা হবে।
আরও পড়ুন:
সমাজমাধ্যমে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘‘২০২৩ সালের ২৭ মার্চ দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাজ্যপালের অনুরোধে তৎকালীন রাজভবনের প্রতীকী চাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সেটা ছিল জনরাজভবনের নতুন যুগের সূচনা। জনগণের চাহিদা, আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং বিভিন্ন সমস্যার কথা মাথায় রেখেই ‘জনরাজভবন’ ভাবনাটি আনা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটিকে জীবন্ত করে তুলতে এই উদ্যোগ। একই সঙ্গে উদ্দেশ্য ছিল, এই ভবনকে সকল স্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া। গত তিন বছরে অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ এখান থেকে হয়েছে।’’
রাজ্যপাল আরও লিখেছেন, ‘‘জনরাজভবন উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য ছিল জনগণের সেবায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করা। প্রয়োজনে তাঁদের পাশে থাকা। রাজ্যে যখনই কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা হিংসা হোক বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জনরাজভবন ভুক্তভোগীদের কাছে পৌঁছেছে।’’ রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বিকশিত ভারত’-এর ভাবনাকে মাথায় রেখে গত ২৫ নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দেশ জুড়ে রাজভবনের নাম ‘লোকভবন’ করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। পশ্চিমবঙ্গে সেই নির্দেশ কার্যকর করা হল।
রাজভবনের ভিতরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বড় একটি ছবি রয়েছে। ভিডিয়োয় প্রথমে সেই ছবির সামনে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপাল বোসকে। হাত জোড় করে এবং নেতাজির পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন তিনি। তার পর প্রণাম করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি মূর্তিকে। রাজভবনের একটি কাঠের দেওয়ালে অশোকস্তম্ভের নীচে সোনালি রঙের অক্ষর বসিয়ে ‘রাজভবন কলকাতা’ লেখা রয়েছে। সেখান থেকে ‘রাজ’ খুলে ‘লোক’ বসান রাজ্যপাল। তাঁর সঙ্গে রাজভবনের অন্যান্য আধিকারিক এবং নিরাপত্তারক্ষীরা ছিলেন।