Advertisement
E-Paper

বিশ্বকর্মা পুজোয় হাফছুটি কি কর্মীদের ডিএ-র ক্ষোভে মলম

ইংরেজি প্রবাদে আছে, দিনটা কেমন যাবে, বলে দেয় সকালই। বাংলায়, অন্তত নবান্নে সেটা হুবহু সত্য হয়ে উঠছে! ১ জানুয়ারি ছুটি দিয়েই শুরু হয়েছিল নবান্নের চলতি বছরের কর্ম-ক্যালেন্ডার। আর এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত কর্মসংস্কৃতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বছরের শেষ পর্বে পৌঁছে সরকারি কর্মী-অফিসারদের অফিস-ক্যালেন্ডার যেন টি-২০ স্লগ ওভারে ব্যাট করছে! সেখানে এখন লাল দাগ অর্থাৎ ছুটির ছড়াছড়ি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২৭

ইংরেজি প্রবাদে আছে, দিনটা কেমন যাবে, বলে দেয় সকালই। বাংলায়, অন্তত নবান্নে সেটা হুবহু সত্য হয়ে উঠছে!

১ জানুয়ারি ছুটি দিয়েই শুরু হয়েছিল নবান্নের চলতি বছরের কর্ম-ক্যালেন্ডার। আর এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত কর্মসংস্কৃতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বছরের শেষ পর্বে পৌঁছে সরকারি কর্মী-অফিসারদের অফিস-ক্যালেন্ডার যেন টি-২০ স্লগ ওভারে ব্যাট করছে! সেখানে এখন লাল দাগ অর্থাৎ ছুটির ছড়াছড়ি। সেই ক্যালেন্ডারে নবতম সংযোজন কাল, বুধবার বিশ্বকর্মা পুজোয় অর্ধদিবস ছুটি। এই নতুন ছুটির কথা সোমবার ঘোষণা করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।

ছুটিতে সাধারণ ভাবে খুশি হওয়ারই কথা। যাঁদের জন্য এই অর্ধদিবস ছুটি, সেই সরকারি কর্মী-অফিসারদের বেশির ভাগই যে এতে অখুশি, তা মোটেই নয়। আসলে আধখানা হলেও এই প্রাপ্তিটা তাঁদের ভাবনার মধ্যেই ছিল না।

তবে অনেকে এই পড়ে পাওয়া ছুটির মধ্যে সরকারের অন্য উদ্দেশ্যও দেখছেন। যেমন আইএনটিইউসি অনুমোদিত কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের নেতা মলয় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “৪৯ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বকেয়া পড়ে গিয়েছে। সরকারি কর্মীরা এখন অর্ধেক বেতন পাচ্ছেন। এই অবস্থায় সরকার বাড়তি ছুটি দিয়ে তাঁদের মন রাখার চেষ্টা করছে!” প্রশ্ন উঠছে, ডিএ-র ক্ষোভে প্রলেপ দিতেই কি এই আধা ছুটি? বিদ্রুপের জব্বর তির হেনেছেন সিপিএম প্রভাবিত কর্মী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা মনোজ গুহ। তিনি বলেন, “রাজ্যে শিল্প ও কলকারখানার যা হাল, তাতে তো এখানে বিশ্বকর্মার পুরো ছুটিই হয়ে গিয়েছে। কর্মীদের হাফ-ছুটিতে কী আর এমন যাবে-আসবে? আর খোদ মুখ্যমন্ত্রী তো সারা ক্ষণই উৎসবের মেজাজে!” ‘বিশ্বকর্মার পুরো ছুটি’ বলতে মনোজবাবুর আঙুল স্পষ্টতই বাংলার দিকে দিকে কলকারখানার ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার দিকে।

বিশ্বকর্মা পুজো মানে বাঙালির উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়া। দিন পনেরো পেরোলেই দুর্গাপুজো। সেখানে এ বার একটানা ন’দিন ছুটির বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২ অক্টোবর গাঁধী জয়ন্তী, সরকারি ছুটির দিন। এ বার ওই দিনেই পড়েছে মহাষ্টমী। আবার পুজোও শেষ হচ্ছে চারের বদলে তিন দিনে অষ্টমী ও নবমী তিথি একই দিনে। ত্রয়োদশীর দিন, মানে ৬ অক্টোবর ঈদুজ্জোহা। সেটিও সরকারি ছুটির দিন। বছরের গোড়াতেই এ-সব হিসেব কষে নিয়ে সরকারি কর্মীদের ছুটিব বহর অটুট রাখতে নবান্ন জানিয়ে দেয়, এ বার ষষ্ঠী থেকে লক্ষ্মীপুজোর পরের দিন অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ন’দিন ছুটি। তার উপরে কালীপুজোতে এ বার এক দিনের বদলে দু’দিন ছুটি।

বস্তুত, ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পর থেকেই সরকারি কর্মীদের ছুটি-ভাগ্য তুঙ্গে। ২০১১-য় ছুটির তালিকা করে গিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। সে-বছর ছুটি ছিল ২৭ দিন। ২০১৪ সালে এসে ছুটি দাঁড়িয়েছে ৩১ দিনে। তার সঙ্গে জামাইষষ্ঠী আর বিশ্বকর্মার হাফছুটি ধরলে ৩২। মুখ্যমন্ত্রীর বদান্যতায় বাকি সাড়ে তিন মাসে আরও দিন কয়েক ছুটি মিলে যেতে পারে বলেও আশায় আশায় আছেন বহু সরকারি কর্মী।

biswakarma pujo half day leave govt employees state news latest news online news latest news online
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy