মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট হতে পারেনি কলকাতা হাইকোর্ট। তাই কান্দি থেকে কিশোরী নিখোঁজের ঘটনায় সিআইডি-র হাতে তদন্তের ভার তুলে দিলেন বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া। বুধবার তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ওই কিশোরীকে উদ্ধারের ব্যাপারে কী করা হয়েছে, তা জানিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে সিআইডি-কে।
কলকাতার লেক টাউনের বাসিন্দা ওই কিশোরী কান্দিতে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। গত ৬ মে সেখান থেকে সে নিখোঁজ হয়ে যায়। তার মামা প্রশান্ত দলুই বারবার পুলিশের কাছে দরবার করেন। মুর্শিদাবাদের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীরের কাছে গিয়েছেন পাঁচ-পাঁচ বার। কিন্তু সব জায়গাতেই বলা শুধু হয়, ‘দেখছি।’ পুলিশ মেয়েটিকে খুঁজে দিতে পারেনি। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন প্রশান্তবাবু।
গত ৪ অগস্ট মামলাটি বিচারপতি পাথেরিয়ার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। পুলিশ তিন মাসেও মেয়েটিকে খুঁজে আনতে না-পারায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি। অবিলম্বে ওই কিশোরীকে খুঁজে বার করতে না-পারলে উঁচু থেকে নিচু তলার সব পুলিশকর্মীকে জেলে পোরা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কিশোরীকে উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশ সেই সময় যে-রিপোর্ট জমা দিয়েছিল, তা জলে ফেলে দিতে বলেছিল হাইকোর্ট।
পরে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার একটি রিপোর্ট দাখিল করে আদালতে জানান, ওই কিশোরীকে পাচার করে দেওয়া হয়েছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং পাচারের ঘটনায় তার আত্মীয়স্বজন জড়িত। বিচারপতি পাথেরিয়া জানিয়েছিলেন, পাচার হোক আর যা-ই হোক, ওই কিশোরীকে খুঁজে বার করে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে হবে পুলিশকেই।
এ দিন ওই মামলার শুনানি শুরু হতেই বিচারপতি রাজ্য সরকারের জিপি (গভর্নমেন্ট প্লিডার) অভ্রতোষ মজুমদারের কাছে জানতে চান, কিশোরীকে খুঁজে বার করা গিয়েছে কি না। জিপি জানান, তার খোঁজ মেলেনি। তবে তাকে হরিয়ানায় একটি ছেলের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। কিন্তু ছেলেটিকে জেরা করেও কিশোরী সম্পর্কে কোনও তথ্য পায়নি পুলিশ।
তার পরেই পুলিশি তদন্তের ব্যাপারে নিজের তীব্র অসন্তোষের কথা জানিয়ে বিচারপতি পাথেরিয়া জানান, তিনি এই মামলার তদন্তভার সিআইডি-র হাতে তুলে দিতে চান। কারণ, জেলা পুলিশও তাঁকে জানিয়েছে, কিশোরীর হদিস পেতে যে-দক্ষতা ও বিশেষজ্ঞ বাহিনী দরকার, তা তাদের হাতে নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy