Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court

অনুদানের অর্থ মাস্ক, স্যানিটাইজার কেনার কাজেই ব্যয়, নির্দেশ কোর্টের

অনুদানের টাকা যাতে জলসা বা পুজো সংক্রান্ত আমোদপ্রমোদ-সহ অন্যান্য খাতে ব্যবহার করা না-হয়, সে ব্যাপারে পুজো কমিটির কর্তাদের ব্যক্তিগত ভাবে দায়বদ্ধ থাকতে বলেছে হাইকোর্ট।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৫৪
Share: Save:

রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পাওয়া অনুদানের ৭৫ শতাংশ মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার, ফেস শিল্ড কেনার কাজেই ব্যয় করতে হবে পুজো কমিটিগুলিকে। বাকি ২৫ শতাংশ কমিউনিটি পুলিশের প্রকল্পে ব্যবহার করা যেতে পারে। শুক্রবার পুজোর অনুদান মামলায় এই নির্দেশই দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানিয়েছে, এই টাকা খরচের হিসেব বা ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট এবং তার সপক্ষে পাকা বিল ও ভাউচার পুজো কমিটিগুলিকে দিতে হবে।

আদালত আরও জানিয়েছে, মহকুমাশাসক বা পুলিশের নির্দিষ্ট অফিসারকে সেই হিসেব স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে পাঠাতে হবে। স্বরাষ্ট্রসচিব পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখে রাজ্য পুলিশের ডিজির মাধ্যমে সিএজি-র কাছে অডিটের জন্য পাঠাবেন। এই পুরো বিষয়ের রিপোর্ট ডিজিকে হলফনামার আকারে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে হাইকোর্টে জমা দিতে হবে।

পুজোর ছুটির দু’সপ্তাহ পরে মামলাটির ফের শুনানি হবে। অনুদানের টাকা যাতে জলসা বা পুজো সংক্রান্ত আমোদপ্রমোদ-সহ অন্যান্য খাতে ব্যবহার করা না-হয়, সে ব্যাপারে পুজো কমিটির কর্তাদের ব্যক্তিগত ভাবে দায়বদ্ধ থাকতে বলেছে হাইকোর্ট। বিষয়টি লিখিত আকারে পুজো কমিটিকে জানাতে হবে পুলিশকে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ৩৪ হাজার পুজো কমিটিকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেন। সব মিলিয়ে অনুদানের অর্থ ১৭০ কোটি টাকা। এ নিয়ে সৌরভ দত্ত নামে পশ্চিম বর্ধমানের এক ব্যক্তি হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন। তাতে বলা হয়, সরকারি টাকা এ ভাবে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অনুদান দেওয়া সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা বিরোধী। যদিও আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, এই খরচ চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে পুলিশের কমিউনিটি প্রকল্পের অন্তর্গত এবং তা বিধানসভায় পাশ করাও হয়েছিল। তবে প্রশাসন এ-ও জানায়, বাজেটে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও পরবর্তী কালে তা বাড়ানো হয়েছে।

তবে প্রশাসনের একাংশের যুক্তি, ধর্মীয় উৎসব নয়, দুর্গাপুজোর একটি বৃহত্তর সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই পুলিশের সামাজিক বরাদ্দ থেকে এই অনুদান দেওয়া হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারে পুজো কমিটিগুলির অতিরিক্ত খরচ হবে বলেই বরাদ্দ বেড়েছে। দুর্গাপুজোর বৃহত্তর সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতের কথা আদালতের নির্দেশেও উল্লেখিত হয়েছে।

এ ভাবে অনুদানের অর্থ আপৎকালীন ভাবে বাড়ানো কত দূর বৈধ বা এমন ঘটনা প্রতি বছর হতে পারে কি না, সেই বিতর্কের অবশ্য অবসান হয়নি। আদালত জানিয়েছে, পরবর্তী কালে সে ব্যাপারে শুনানি হবে। পুজোর ছুটির পরে এক সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারীর বক্তব্যের পাল্টা রাজ্যকে হলফনামা দিতে হবে এবং সেই হলফনামা দেওয়ার পরের এক সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারীকে জবাবি হলফনামা দিতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE