Advertisement
E-Paper

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নয়া ওষুধ-বিধি

ন্যাশনাল হেল্‌থ প্রোফাইল অনুযায়ী বাংলায় উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ৮৫ হাজার ১৩৪।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ১০:৩০
শহরাঞ্চলে ৩৫ - ৪০ শতাংশ ৪০ পেরিয়ে যাওয়া মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। ছবি: শাটারস্টক

শহরাঞ্চলে ৩৫ - ৪০ শতাংশ ৪০ পেরিয়ে যাওয়া মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। ছবি: শাটারস্টক

সরকারি চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্র মেনে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ জোগাতে ‘রক্তচাপ’ বাড়ছিল বিভিন্ন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। শেষ পর্যন্ত সমস্যার সমাধানে দাওয়াই প্রয়োগ করল খাস স্বাস্থ্য ভবনই। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ‘প্রোটোকল’ বা বিশেষ বিধি চালু করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, এক ঢিলে দুই পাখি মারার কাজ করেছে এই প্রোটোকল।

ন্যাশনাল হেল্‌থ প্রোফাইল অনুযায়ী বাংলায় উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দু’লক্ষ ৮৫ হাজার ১৩৪। স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, এই বিপুল সংখ্যক রোগীর ভার কমাতে সহায়ক হবে নতুন বিধি। ওই বিধির সূত্রে বলা হচ্ছে আরও একটি প্রাপ্তিযোগের কথাও। রক্তচাপের নিরিখে কী ওষুধ দিতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই প্রোটোকলে। কোন পরিস্থিতিতে, ক’দিনের ব্যবধানে ওষুধের পরিমাণ কতটা বাড়াতে-কমাতে হবে, ক’দিন পরে চিকিৎসক কী ওষুধ লিখবেন, নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে তা-ও। হাসপাতালগুলিতে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের যে-ঘাটতি রয়েছে, সেই সমস্যার মোকাবিলা করাও এই ধরনের বিশেষ ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার অন্যতম লক্ষ্য বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ।

এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘এত দিন এক-এক জন চিকিৎসক উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এক-এক রকম ওষুধ লিখতেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালে যে-ওষুধ নেই, লেখা হচ্ছে তা-ও। আবার কম ও বেশি দামের ওষুধে একই ক্রিয়া হলেও দামি ওষুধ লেখার প্রবণতা রয়েছে অনেক চিকিৎসকের। রোগী ওষুধ না-পেয়ে বাইরে থেকে কিনছেন। এতে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের নীতি মার খাচ্ছিল। সবাই আলাদা আলাদা ওষুধ লিখলে তা জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রোটোকলে বেঁধে দেওয়া হল।’’ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা ছাড় রয়েছে। এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, প্রোটোকল চালু হওয়ায় এক রকমের চিকিৎসা যেমন সুনিশ্চিত হল, তেমন ওষুধের ঘাটতিও মেটানো যাবে। জনসংখ্যার অনুপাতে কত ওষুধ প্রয়োজন, বোঝা যাবে সেটাও।’’

আরও পড়ুন: আধারের জন্য সারা রাত লাইনে ১১ হাজার

তবে স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, প্রোটোকলের মূল অভিপ্রায় উচ্চ রক্তচাপজনিত অসুখ নিয়ন্ত্রণ। ওই কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্যে ১০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে প্রতি বছর পাঁচ লক্ষ মানুষ মারা যান। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষের মৃত্যুর কারণ হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিসের মতো দু’-তিনটি ‘নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ়’। এর মধ্যে মুখ, স্তন এবং জরায়ুমুখের ক্যানসারও রয়েছে।

এই পরিস্থিতির জন্য এ ধরনের ‘নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িজ় সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন ওই স্বাস্থ্যকর্তা। এই প্রেক্ষিতে ‘ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অব ক্যানসার, ডায়াবিটিস, কার্ডিয়োভাস্কুলার ডিজ়িজ়েস অ্যান্ড স্ট্রোক’ বা এনপিসিডিসিএসের আওতায় একটি প্রকল্প চালু হয়েছে এ রাজ্যে। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, এখন ন’টি জেলায় ওই প্রকল্পের কাজ চলছে। জানুয়ারির মধ্যে আরও ১০টি জেলা এর অন্তর্ভুক্ত হবে। ৩০ বছরের বেশি বয়সের সব বাসিন্দার বছরে অন্তত এক বার শারীরিক পরীক্ষা নিশ্চিত করা এই প্রকল্পের লক্ষ্য।

আরও পড়ুন: খড়্গপুর স্টেশনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মাসাজ চেয়ারও

এক স্বাস্থ্যকর্তার পর্যবেক্ষণ, রাজ্যে অন্তত ৬০ লক্ষ মানুষ জানেনই না যে, তাঁদের উচ্চ রক্তচাপ আছে! ফাস্টফুডের মতো যে-সব খাবারে ‘ট্রান্স ফ্যাট’ রয়েছে, তা সব চেয়ে খারাপ। ‘‘তাই কেমন খাবার খাওয়া উচিত, প্রোটোকলে তা বলা হয়েছে। জীবনশৈলী বদলের পাশাপাশি রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শারীরিক কসরতের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে,’’ বলেন ওই স্বাস্থ্যকর্তা।

Health Health Department High Blood Pressure
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy