Advertisement
E-Paper

এডস নিয়ে সচেতনতার অভাব, মুখ লুকোতে রাজি নন ওঁরা

সচেতনতার অভাব থেকেই গিয়েছে। ভাড়াটেকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে, চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন, পাড়াপড়শির বাঁকা নজর থেকেও রেহাই পাননি এইচআইভি পজিটিভরা।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৫
বিশ্ব এডস দিবসে মিছিল মছলন্দপুরে। ছবি: সুজিত দুয়ারি

বিশ্ব এডস দিবসে মিছিল মছলন্দপুরে। ছবি: সুজিত দুয়ারি

অনেক হয়েছে মুখ লুকিয়ে থাকা। পথে নেমে সরব না হলে ক্রমশ আরও কোণঠাসা হতে থাকবেন, এমনটা বিলক্ষণ বুঝেছেন ওঁরা। তাই বিশ্ব এডস দিবসের সকালে, রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরে মিছিলে পা মেলালেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার দু’য়েক এইচআইভি পজিটিভ নারী-পুরুষ। বেশ কিছু শিশুকেও দেখা গেল মিছিলে। ছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, স্বাস্থ্যকর্তা, সাংস্কৃতিক কর্মীরা। কারও হাতের পোস্টারে লেখা, ‘এইচআইভি পজিটিভদের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য করা যাবে না।’ কোনও পোস্টারে বার্তা দেওয়া হয়েছে, ‘পোকার কামড়, চুম্বন, শৌচালয় ব্যবহার করলে এইচআইভি সংক্রমণ ছড়ায় না।’’

এই কথাগুলোই দীর্ঘদিন ধরে প্রচার করছে সরকার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু সচেতনতার অভাব থেকেই গিয়েছে। ভাড়াটেকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে, চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন, পাড়াপড়শির বাঁকা নজর থেকেও রেহাই পাননি এইচআইভি পজিটিভরা। অনেক ক্ষেত্রে একঘরে হতে হয়েছে। মছলন্দপুরের মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে হাসনাবাদের বাসিন্দা এক যুবক বললেন, ‘‘সামাজিক চাপ কাটাতে পথে নামতে হবে বলে এখন বুঝতে পারছি আমরা।’’ চার বছর আগে তাঁর এবং ছেলের এইচআইভি পজিটিভ ধরা পড়ে। ছেলেকে স্কুলে আসতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই যুবকের কথায়, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে পায়ে ধরি। কাজ না হওয়ায় জেলাশাসক, স্কুল পরিদর্শককে জানাই। মাসখানেক ছোটাছুটির পরে স্কুল রাজি হয়।’’

তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এ দিনের মিছিল। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের মধ্যে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্তা সমীর বিশ্বাস বলেন, ‘‘এইচআইভি পজিটিভদের সামাজিক নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। কাজ থেকে, বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, সরকার এইচআইভি আক্রান্তদের বাসস্থান তৈরি করে দিক। তা হলে সেখানে এঁরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবেন। অন্য একটি উদ্যোক্তা সংস্থার কর্তা ইন্দ্রজিৎ পোদ্দার বলেন, ‘‘মানুষ সচেতন হলে এইচআইভি আক্রান্তেরা আর পাঁচটা মানুষের মতো সম্মান নিয়ে বাস করতে পারবেন।’’

আরও পড়ুন: বিশ্রাম কমিয়ে রাতেও কামড় এডিসের

মিছিল শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন মোবাইলে ছবি তুলছিলেন আক্রান্তদের অনেকে। কেউ কেউ বললেন, ‘‘এত দিন নিজেদের লুকিয়ে রাখতাম আমরা। পাছে কেউ রোগটার কথা জানতে পারে। কিন্তু তাতে আরও কোণঠাসা হয়েছি নানা ভাবে। এখন খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে নিজের সমস্যাটার কথা জানাতে দ্বিধা নেই। আমাদের নাগরিক অধিকার আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’’ রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মানুষ আজ অনেকটাই পুরনো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।’’

World AIDS Day Health AIDS
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy