E-Paper

ঘণ্টা বাজালেন শিক্ষক, পরীক্ষায় ‘গার্ড’ শিক্ষাকর্মী

পাঁচলার গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরের একাদশ-দ্বাদশের ইংরেজি মাধ্যম বিভাগে চার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। ওই বিভাগ এখন শিক্ষকশূন্য।

নুরুল আবসার , সুব্রত জানা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৪২
চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী নেই, তাই কাঁটাবেড়িয়া তরুণ সঙ্ঘ হাইস্কুলে শিক্ষককেই ঘণ্টা বাজাতে হচ্ছে।

চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী নেই, তাই কাঁটাবেড়িয়া তরুণ সঙ্ঘ হাইস্কুলে শিক্ষককেই ঘণ্টা বাজাতে হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র ।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি যাওয়া হাওড়া জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের সিংহভাগ শুক্রবার স্কুলে এলেন না। তাঁদের অনুপস্থিতিতে স্কুল চালাতে রীতিমতো সমস্যায় পড়লেন কর্তৃপক্ষ। কোথাও এক বিভাগের শিক্ষক অন্য বিভাগের ক্লাস নিলেন। কোথাও ছুটির ঘণ্টা বাজাতে হল শিক্ষককে।

পাঁচলার গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরের একাদশ-দ্বাদশের ইংরেজি মাধ্যম বিভাগে চার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। ওই বিভাগ এখন শিক্ষকশূন্য। ওই শিক্ষকেরা বাংলা মাধ্যমেও ক্লাস নিতেন। শুক্রবার তাঁরা স্কুলে আসেননি। তাঁদের শূন্যস্থান এ দিন পূরণ করলেন বাংলা মাধ্যমের শিক্ষকেরাই। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, এই মুহূর্তে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া নেই। বাংলা মাধ্যমের শিক্ষকেরাই দুই মাধ্যমে দ্বাদশের পড়ুয়াদের ক্লাস নিয়েছেন।

টিচার ইনচার্জ বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ‘‘বাংলা মাধ্যমের শিক্ষকেরা যে ইংরেজি মাধ্যমে একদমই পড়াতে পারবেন না, তা নয়। আজ তাঁরাই ঘাটতি সামলেছেন।’’ সমস্যা সমাধানে স্থানীয় বিএড কলেজের পড়ুয়া এবং স্কুলের বৃত্তিমূলক শিক্ষকদের দিয়েও পড়ানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বাংলা বিভাগের দুই শিক্ষকও আছেন চাকরি হারানোর তালিকায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং বাণিজ্য বিভাগের ওই দুই শিক্ষকও এ দিন স্কুলে আসেননি। টিচার ইন চার্জ বলেন, ‘‘আমরা কাউকে আসতে বারণ করিনি। ওঁরা নিজেরাই আসেননি।’’

পাঁচলা আজিম মোয়াজ্জেম হাই স্কুলের চার জন শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন। তাঁরাও এ দিন স্কুলে আসেননি। স্কুলে সিমেস্টার পরীক্ষা চলছে। শিক্ষক সংখ্যা কমে যাওয়ায় ‘গার্ড’ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন স্কুল কর্তৃপক্ষ। টিচার ইনচার্জ এস এম শামসুদ্দিন বলেন, ‘‘এক জন শিক্ষাকর্মীকে গার্ড দেওয়ার কাজে লাগানো হয়।’’

বাগনানের দেউলিগ্রাম মানকুর বাকসি (ডিএমবি) হাই স্কুলের ছ’জন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন শুক্রবার স্কুলে আসেননি। ফলে, এখানেও পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এক জন শিক্ষক সাধারণত একটি পর্বে ‘গার্ড’ দেন। এ দিন দু’টি পর্বেই ‘গার্ড’ দিতে হয়েছে। টিচার ইনচার্জ উকিলকুমার হাঁসদার বক্তব্য, ‘‘পরীক্ষাপর্ব না হয় ঠেকনা দিয়ে সামলে নেওয়া যাবে। কিন্তু পঠনপাঠন চালাতে পারা যাবে কি না, সন্দেহ। এতজন শিক্ষকের অভাব পূরণ করা কার্যত অসম্ভব।’’ চাকরি হারানো যে শিক্ষক স্কুলে এসেছিলেন, তিনি কথা বলতে চাননি।

কাঁটাবেড়িয়া তরুণ সঙ্ঘ হাই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। তিনি না আসায় এ দিন শিক্ষকেরা ঘণ্টা বাজান। টিচার ইনচার্জ মৌসুম সাহু জানান, করণিক না থাকায় সেই কাজ শিক্ষকদের করতে হয়। এ বার চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর কাজও যুক্ত হল। করণিকের চাকরি যাওয়ায় যদুরবেড়িয়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়েও সেই কাজ চালানোর দায়িত্ব শিক্ষিকাদেরই সামলাতে হবে বলে প্রধান শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা ঘোষ জানান।

জগৎপুর আদর্শ বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ শ্যামলকুমার মণ্ডল জানান, রসায়নের এক শিক্ষক, শিক্ষাবিজ্ঞানের এক শিক্ষিকা এবং এক করণিক চাকরি হারিয়েছেন। একাদশ-দ্বাদশে রসায়নের ক্লাস নিয়ে চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSC Uluberia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy