মঙ্গলবার খানাকুলের ঠাকুরানিচক ইউনিয়ন হাইস্কুলে চলছে খাওয়া। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
আশপাশের বিস্তীর্ণ অংশের জল এই এলাকা দিয়ে নামে। তার উপরে রূপনারায়ণ নদ ভরা। ফলে, হুগলির খানাকুল-২ ব্লকের জল সে ভাবে নামেনি। উল্টে, রাস্তাঘাট জেগে ওঠার আগেই মঙ্গলবার ধান্যগোড়ি, মাড়োখানা, জগৎপুর এবং রাজহাটি-১ পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১ ফুট জল বেড়েছে। দ্বারকেশ্বরের বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা দিয়ে জল ঢুকে এই পরিস্থিতি। এই সব এলাকা ৪-৫ ফুট জলের তলায়।
আরামবাগ মহকুমায় দামোদর দিন তিনেক প্রাথমিক বিপদসীমার নীচে ছিল। মঙ্গলবার এই নদে ফের জল বেড়ে বিপদসীমার কাছে পৌঁছেছে। তবে মুণ্ডেশ্বরী এবং দ্বারকেশ্বর প্রাথমিক বিপদসীমার অনেক নীচে বইছে। ফলে, নতুন করে প্লাবনের আশঙ্কা নেইবলে সেচ দফতরের আধিকারিকরা মনে করছেন।
আরামবাগ, পুরশুড়া, গোঘাট-১ ও ২ ব্লকের জল সম্পূর্ণ নেমে গিয়েছে। খানাকুল-১ ব্লকের অধিকাংশ জায়গায় জল কমেছে। এই সব এলাকায় জনজীবন ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে। খানাকুল-১ ব্লকে মাঠের জমা জল মুণ্ডেশ্বরী নদীতে নেমে যাচ্ছে। তাতে নদীর বাঁধে ধস নামছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, ডিভিসি ফের জল ছাড়লে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা দিয়ে জল গ্রামে ঢুকবে।
এ দিকে, ত্রাণের দাবিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ বাড়ছে। ত্রিপল বা খাদ্যসামগ্রী না পেয়ে মানুষ পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের চেহারা দেখাতে প্রধান, উপপ্রধান বা সদস্যদের জোর করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। খানাকুলের
ধান্যগড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ সানকির অভিযোগ, ‘‘ত্রাণ না পেয়ে মানুষ আমাদের টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ঘরের হাল দেখাতে। এখানে ১০০ শতাংশ মানুষেরই ত্রাণসামগ্রী প্রয়োজন। সেই তুলনায় ব্লক থেকে কিছুই পাচ্ছি না।’’ তিনি জানান, এখানে কয়েক হাজার বাড়ি এক তলা পর্যন্ত ডুবে। মাটির বাড়ি অবশিষ্ট নেই। বহু মানুষ নিজের বা অপরের বাড়ির দোতলা বা এক তলার ছাদে কোনও রকমে থাকছেন। এই যেখানে পরিস্থিতি, সেখানে এক হাজার ত্রিপলও মেলেনি। যে পরিমাণ চাল পাওয়া গিয়েছে, তাতে পাঁচ হাজার পরিবারের মাত্র এক সপ্তাহ চলবে। খানাকুলের দু’টি ব্লকের ২৪টি পঞ্চায়েতেই ত্রাণের অপ্রতুলতা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।
মহকুমাশাসক হাসিন জাহেরা রিজভি বলেন, ‘‘ত্রাণের অসুবিধা হবে না। চাহিদা অনুযায়ী দফায় দফায় সব পঞ্চায়েতে তা পাঠানো হচ্ছে।’’ তিনি জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত খানাকুলের দু’টি ব্লকে ৩০টি সরকারি ত্রাণশিবির চলছে। বিভিন্ন পঞ্চায়েতের তরফেও বেশ কিছু ত্রাণশিবির করে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে দুর্গতদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy