আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা করছিলেন। হুগলির পাণ্ডুয়ায় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগই উঠল। মুচলেকা দিয়ে আপাতত রেহাই পেলেন ওই চিকিৎসক নিতাই সেনাপতি।
পাণ্ডুয়ার কালনা মোড় এলাকায় একটি ওষুধের দোকানে চেম্বার খুলে রোগী দেখতেন নিতাই। অভিযোগ, নিজেকে এমডি ডিগ্রিধারী পরিচয় দিয়ে রোগীদের অ্যালোপাথিক ওষুধ দিতেন তিনি। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হয়েও অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা করার জন্য ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পাণ্ডুয়ার মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মঞ্জুর আলমের কাছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়ে। সোমবার পাণ্ডুয়ার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষকে নিয়ে ওই চিকিৎসকের চেম্বারে যান বিএমওএইচ। তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, যে প্রেসক্রিপশনে নিতাই ওষুধ লিখতেন তার কোনওটায় রেজিস্ট্রেশন নম্বর আছে আবার কোনওটায় নেই। ডিগ্রি হিসাবে এমডি লেখা থাকলেও তা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। সব দেখে মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক নির্দেশ দেন, সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে তাঁর দফতরে গিয়ে দেখা করার জন্য। নিজের চেম্বার শেষ করে রাতে ওই আধিকারিকের দফতরে গিয়ে দেখা করেন চিকিৎসক।
মহকুমা ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, চিকিৎসকের কাগজপত্র দেখে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হলেও অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করতেন নিতাই। জানা গিয়েছে, আপাতত ওই চিকিৎসককে দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। যাতে স্পষ্ট লেখা, তিনি আর অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা করবেন না।
আরও পড়ুন:
এই প্রসঙ্গে পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ নিশাপতি রক্ষিত বলেন, ‘‘গত ২২ বছর ধরে নিজেকে অ্যালোপ্যাথিক ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা করছিলেন নিতাই। আসলে উনি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। চারশো টাকা করে ভিজিট নিতেন। দেড়শো টাকার ওষুধ দিতেন। বেআইনি ভাবেই অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা করছিলেন। বিষয়টি জানার পরেই ওঁকে ধরা হয়। উনি মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন ভুল করে অ্যালোপাথিক চিকিৎসা করছিলেন। আর এমন হবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এর পরেও ওঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা আমরা ভাবছি। প্রয়োজনে থানাতেও অভিযোগ করা হতে পারে। কারণ উনি বহু মানুষকে ঠকিয়েছেন।’’
চিকিৎসক নিতাই সেনাপতি বলেন, ‘‘আমার যা যা কাগজ ছিল তা দেখিয়েছি। আমি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। আয়ুর্বেদ চিকিৎসাই করব।’’ এক জন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হয়ে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা কেন করছিলেন? ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমাদের কাউন্সিলের নির্দেশ আছে ৬৭ টা এই ধরনের ওষুধের নাম লেখা যায়।’’