E-Paper

পড়াবেন কারা? ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বন্ধের শঙ্কা

এই স্কুলে আগে শুধু বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা হত। তার পাশাপাশি শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগে ইংরেজি মাধ্যম চালু হয় ২০১২ সালে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ১০:১০
গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির।

গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির।

এ যেন অস্তিত্বের সঙ্কট!

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চার শিক্ষক-শিক্ষিকাই চাকরি হারানোয় এই অবস্থাতেই দাঁড়িয়েছে পাঁচলার গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দিরের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যম বিভাগ। চার শিক্ষকই নিযুক্ত হয়েছিলেন ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্যানেল থেকে।

স্কুল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, শিক্ষকশূন্য হয়ে যাওয়ায় ইংরেজি মাধ্যম বিভাগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। টিচার ইনচার্জ বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ‘‘জানি না কী হবে! তবে, আমরা ওই শিক্ষকদের স্কুলে আসতে নিষেধ করিনি। এ বিষয়ে রাজ্য সরকার যে নির্দেশিকা দেবে, তা মেনে চলব।’’ ওই শিক্ষকেরা কোনও মন্তব্য করেননি।

এই স্কুলে আগে শুধু বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা হত। তার পাশাপাশি শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগে ইংরেজি মাধ্যম চালু হয় ২০১২ সালে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এই বিভাগের জন্য চার জন শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন দেয়। সেই মতো স্কুলের তরফে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক মারফত স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়। ২০১৮ সালে ওই চার শিক্ষক যোগ দেন। তৎকালীন টিচার ইনচার্জ শঙ্কর খাঁড়া বলেন, ‘‘চার শিক্ষকেরই সব কাগজপত্র ঠিক ছিল। তাঁরা ভাল পড়ান। ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়ার সংখ্যাও বাড়ে। তাঁরা বাংলা মাধ্যমেও পড়ান।’’

বর্তমান টিচার ইনচার্জ বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে মন্তব্য করার অধিকার আমার নেই। তবে গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পঠনপাঠন ধাক্কা খাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে গরিব পরিবারগুলি।’’

গ্রামীণ হাওড়ায় সরকারপোষিত স্কুলের মধ্যে একমাত্র এই প্রতিষ্ঠানেই একাদশ-দ্বাদশে ইংরেজি মাধ্যম বিভাগ রয়েছে। ইংরেজি মাধ্যমের জন্য যিনি মূলত তদ্বির করেছিলেন, তিনি হলেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সন্তোষকুমার দাস। তিনি বলেন, ‘‘ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর অনুমতি পেতে কত দৌড়াদৌড়ি করেছি। শিক্ষক চেয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে হত্যে দিয়েছি। তার যে এই পরিণাম হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি।’’

এতটা না হলেও সমস্যায় পড়ল জেলার আরও কিছু স্কুলও। পাঁচলা আজিম মোয়াজ্জেম হাই স্কুলে পড়ুয়া প্রায় ৩৮০০। অনুমোদিত ৬১ জন শিক্ষকের মধ্যে ছিলেন ৪৩ জন। তার মধ্যে চার জনের চাকরি গেল। টিচার ইনচার্জ এস এম শামসুদ্দিন বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে সরকার কী নির্দেশিকা দেয়, তার অপেক্ষায় আছি। আমরা ওই শিক্ষকদের পাশে আছি।’’ বাগনানের দেউলগ্রাম মানকুর বাকসি (ডিএমবি) হাই স্কুলের ছয় শিক্ষকেরও চাকরি গিয়েছে। স্কুল সূত্রের খবর, রসায়ন, ভূগোল আর হিসাবশাস্ত্রের কোনও শিক্ষক রইলেন না। সমস্যায় শ্যামপুরের খাজরি ত্রিপুরাপুর হাই স্কুলও। পদার্থবিদ্যার শিক্ষক অভিজিৎ মাইতি বলেন, ‘‘পরীক্ষা দিয়ে মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমি হতাশ।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panchla SSC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy