E-Paper

বয়স সংখ্যামাত্র, খেলার মাঠে বোঝালেন ওঁরা

৩০ বছরের বেশি বয়সি অ্যাথলিটদের জন্য এই প্রতিযোগিতা। উদ্যোক্তারা জানালেন, মোট প্রতিযোগী ছিলেন ৩৮৫ জন। তাঁদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ৮০-র আশপাশে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৫
চলছে লড়াই। রবিবার চুঁচুড়া ময়দানে। নিজস্ব চিত্র।

চলছে লড়াই। রবিবার চুঁচুড়া ময়দানে। নিজস্ব চিত্র।

বাঁশি পড়তেই ক্ষিপ্র বেগে দৌড় শুরু করলেন ওঁরা। জোর টক্কর। কে বলবে কেউ ৭০ বছর পেরিয়েছেন, কেউ পার করে ফেলেছেন ৮০! শনি ও রবিবার এমনই একঝাঁক ‘তরুণ’ অ্যাথলিট দাপিয়ে বেড়ালেন হুগলির চুঁচুড়া ময়দানে। উপলক্ষ— অষ্টম জাতীয় মাস্টার্স অ্যাথলেটিক মিট।

৩০ বছরের বেশি বয়সি অ্যাথলিটদের জন্য এই প্রতিযোগিতা। উদ্যোক্তারা জানালেন, মোট প্রতিযোগী ছিলেন ৩৮৫ জন। তাঁদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ৮০-র আশপাশে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড ইত্যাদি রাজ্য থেকে প্রতিযোগীরা এসেছিলেন। ১০০, ২০০, ৪০০, ৮০০, ১৫০০, ৫০০০ ও ১০০০০ মিটার দৌড়, হাই জাম্প, লং জাম্প, রিলে, মিক্সড রিলে, শটপাট, জ্যাভলিন ছোড়া, ডিসকাস ছোড়া, হাঁটা ইত্যাদিতে যোগ দিলেন তাঁরা। বয়সের ভিত্তিতে মোট ইভেন্ট ছিল ৩২৭টি। হুগলি থেকে প্রতিযোগীর সংখ্যা ৬২ জন। শারীরিক সক্ষমতা, জেতার তাগিদে নজর কাড়লেন প্রবীণেরা। তাঁরা হেলায় হারালেন বয়সকে।

প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়, নির্মাল্য চক্রবর্তী, বেঙ্গল মাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গণেশচন্দ্র সরকার প্রমুখ। সংগঠনের হুগলি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত অধিকারী জানালেন, পুরুষদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন সত্তরোর্ধ্ব। অশীতিপর ৪ জন। সবচেয়ে বেশি বয়স্ক প্রতিযোগী গার্ডেনরিচের সমরকুমার পাল। তাঁর বয়স ৮৪ বছর। মহিলাদের মধ্যে ছিলেন ৭৫ পার করা চার জন।

মহারাষ্ট্র থেকে আসা সুরেশ চন্দের ইভেন্ট ছিল শটপাট, ডিসকাস, জ্যাভলিন। তার মতোই ৮০ বছর পেরনো উত্তরপ্রদেশের অশোক কুমার নন্দ দৌড়লেন ১০০, ২০০, ৪০০ মিটার। ৩ কিলোমিটার হাঁটাতেও নামলেন। ১০০ মিটারে তাঁর ছুট দেখে হাততালি দিল মাঠ। ৮৫ ছুঁতে চলা সমরও ১০০ মিটার দৌড়লেন। শটপাট, ডিসকাস, জ্যাভলিন ছোড়াতেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন। সকলেই যেন টগবগে ‘যুবক’! এই সব ‘পক্ককেশ যুবক’দের লড়াই দেখতে থমকে দাঁড়ালেন পথচলতি মানুষ।

মহিলাদের ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড় এবং ২ কিলোমিটার হাঁটায় যোগ দিলেন হুগলির আরতি কংসবণিক, উত্তর ২৪ পরগনার যুগলরানি রায়, পূর্ণিমা দে। তিন জনেরই বয়স ৭৫ বছরের বেশি। তবে, নাছোড় মানসিকতায় সেই বয়স যেন থমকে রইল তরুণী বেলাতেই। সকলেই ফুল ফোটালেন হুগলির জেলা সদরের মাঠে।

অনেকেই জানালেন, সংসার সামলেই নিয়মিত খেলার মাঠে যান। সবুজ ঘাস তাঁদের প্রাণশক্তি জোগায়। নিয়মিত শরীরচর্চা তাঁদের ভাল থাকার চাবিকাঠি। বয়স এখানে সংখ্যামাত্র।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chinsurah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy