Advertisement
০৭ মে ২০২৪
bank fraud

ব্যাঙ্কের কেটে নেওয়া ৪৫০ টাকা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করতেই অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ৯ লক্ষ!

অপূর্ব ভঞ্জের অভিযোগ, যখন দফায় দফায় তার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই একই দিনে টাকা তোলা হচ্ছিল, তখন তাঁর মোবাইলে কোনও এসএমএস ঢোকেনি।

অপূর্ব ভঞ্জ ও তাঁর মেয়ে অদিতি।

অপূর্ব ভঞ্জ ও তাঁর মেয়ে অদিতি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:৪০
Share: Save:

ব্যাঙ্ক প্রতারণা চক্রের হাতে পড়ে বিপুল অঙ্কের সঞ্চিত অর্থ খোয়ালেন হাওড়া শিবপুরের অপূর্ব ভঞ্জ। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও অপরাধীদের কোনও হদিশ এখনও পাওয়া যায়নি।

শিবপুরের রজনীকান্ত রায়চৌধুরী লেনের বাসিন্দা অপূর্ব সম্প্রতি একটি নামী রং প্রস্তুতকারী কোম্পানির কেমিস্ট পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন। অবসরের পর তিনি তাঁর প্রাপ্ত অর্থ দু’টি ব্যাঙ্কে জমা রাখেন। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের শিবপুর শাখার পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ‘উজ্জীবন স্মল ফাইন্যান্স’-এ তাঁর সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং ফিক্সড ডিপোজিট আছে।

সম্প্রতি পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ডেবিট কার্ডের জন্য ৪৫০ টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেয়। গত ১০ ফেব্রুয়ারি সেই টাকা তিনি সেভিংস অ্যাকাউন্টে ফেরত পাওয়ার জন্য পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। সে কারণে তিনি ইন্টারনেট থেকে ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবার দফতরের নম্বর জোগাড় করে ফোন করেন। ওই নম্বরে রাহুল সরস্বতী নামে এক যুবক নিজেকে গ্রাহক পরিষেবা কর্মী পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। ওই যুবক তাঁকে জানান, চিন্তার কোনও কারণ নেই, ৪৫০ টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

কিছু ক্ষণ বাদে ওই যুবক ফের তাঁকে ফোন করে জানান, যান্ত্রিক কারণে ওই টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে দেওয়া যাচ্ছে না। এই বলে তিনি অন্য ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর চান। ভরসা করে যে নম্বর অপূর্ব ওই যুবককে দিয়েছিলেন, সেটিতে তাঁর ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা ছিল। কথার ফাঁকে তাঁর কার্ডের বিস্তারিত তথ্য ও ওটিপি নম্বর তিনি দিয়ে ফেলেন ওই যুবককে।

কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর ফিক্সড ডিপোজিট থেকে টাকা অন্য একটি অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলা হয়। নতুন পিন নম্বর তৈরি করে পর পর সেখান থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা বিভিন্ন ওয়ালেটের মাধ্যমে তুলে নেওয়া হয়। আলাদা করে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ডের ওটিপি শেয়ার করার জন্য সেখান থেকেও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা তুলে নেয় প্রতারকরা। অপূর্ব ভঞ্জের অভিযোগ, যখন দফায় দফায় তার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই একই দিনে টাকা তোলা হচ্ছিল, তখন তাঁর মোবাইলে কোনও এসএমএস ঢোকেনি। যদিও তাঁর অ্যাকাউন্টে এসএমএস-এর সুবিধা ছিল। কিন্তু গোটা ঘটনা এসএমএস-এর বদলে তাঁকে ই-মেল করে জানানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে না জানতে পারলেও পরে মেল থেকে তিনি জানতে পারেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে বেশির ভাগ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে।

প্রতারিতের মেয়ে অদিতি অভিযোগ করেছেন, ‘‘যখন বিভিন্ন ওয়ালেট-এর মাধ্যমে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে, তখন দেরি করে কেন মেল পাঠানো হল?’’ পাশাপাশি অভিযোগ জানানোর পর যাতে ওই ওয়ালেট কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার জন্য তিনি সরকারি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

ঘটনার পর ওই ব্যক্তি শিবপুর বটানিক্যাল গার্ডেন থানাতে অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি হাওড়া সিটি পুলিশ এর সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bank fraud
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE