E-Paper

রাস্তায় নেই বাস, বাড়তি ভিড় ট্রেনে, দুর্ভোগ এড়াতে বেরোলেন না অনেকে

অনেকেই কাজে এসে ফিরে যান। বাস না মেলায় বিকল্প ব্যবস্থায় অতিরিক্ত খরচ করে গন্তব্যে পৌঁছন অনেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৫ ০৯:০৪
বাস স্ট্যান্ড ফাঁকা। সোমবার আরামবাগে। কালীপুর চৌমাথা মোড়ও শুনশান

বাস স্ট্যান্ড ফাঁকা। সোমবার আরামবাগে। কালীপুর চৌমাথা মোড়ও শুনশান

আশঙ্কা সত্যি করেই তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের কারণে হাওড়া ও হুগলিতে সোমবার কার্যত মিলল না বাস। ট্রেনে বাড়তি ভিড় হল। দুর্ভোগের আশঙ্কায় অনেকে বেরোননি।

রবিবার মধ্যরাত থেকে মুম্বই রোড ধরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বোঝাই সারি সারি সরকারি-বেসরকারি বাস সমাবেশে গিয়েছে। রুটে বাস ছিল না বললেই চলে। শ্যামপুর, আমতা, উদয়নারায়ণপুরে অটো-টোটো, ট্রেকার ছিল। তবে, সব ক্ষেত্রেই যাত্রী ছিল কম। হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় লোকাল ট্রেনেও নিত্যযাত্রীর সংখ্যা কম ছিল। ট্রেন ছিল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকে ভর্তি। ভিড় সামলাতে বাগনান, উলুবেড়িয়া স্টেশনে বিশেষ পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র করে রেল পুলিশ। মুম্বই রোডেও ছিল গ্রামীণ জেলা পুলিশের কড়া নজরদারি।

কলকাতা থেকে বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়ার মতো জেলা থেকে বাস, গাড়ি রবিবার রাত ৯টার পর থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে ডানকুনি হয়ে সমাবেশে গিয়েছে। কাকভোর থেকে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের প্রচুর গাড়ি গিয়েছে।

জেলা সদর চুঁচুড়ায় বিভিন্ন সরকারি দফতরে কর্মিসংখ্যা কম ছিল। অনেকেই কাজে এসে ফিরে যান। বাস না মেলায় বিকল্প ব্যবস্থায় অতিরিক্ত খরচ করে গন্তব্যে পৌঁছন অনেকে। তোলাফটকের ফৌজিয়া বিবি পুরসভায় গিয়ে ফিরে আসেন সংশ্লিষ্ট বিভাগে কর্মী না থাকায়। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি অফিস ফাঁকা থাকবে, কী করে জানব!’’

আরামবাগ মহকুমায় বেসরকারি তো বটেই, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের আরামবাগ ডিপোর ২৪টি বাসই ভাড়া করে সমাবেশে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোগান্তির আশঙ্কায় যাত্রীও বিশেষ ছিলেন না। জরুরি কাজে বেরোনো যাত্রীদের দূরের গন্তব্যে পৌঁছতে পাঁচ থেকে আট গুণ বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে। স্কুলের গাড়িও না বেরোনোয় উত্তরপাড়া, মাখলা, ডানকুনির বিভিন্ন স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কম ছিল। বাস, টোটো, অটো না পেয়ে ভোগান্তি হয় মানুষের। শ্রীরামপুর থেকে অটোও গিয়েছে সমাবেশে।

চাঁপাডাঙা-বনহুগলি রুটে ১৬টি বাসের সিকিভাগ চলেছে। তারকেশ্বর-উদয়নায়ণপুর, তারকেশ্বর-খুশিগঞ্জ বাসরুট অবশ্য পুরো সচল ছিল। তারকেশ্বর-বাঁকুড়া রুটের কিছু বাস আরামবাগ পর্যন্ত চলেছে। হুগলি ইন্টার রিজিয়ন এক্সপ্রেস বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক গৌতম ধোলে বলেন, ‘‘বাস গরিবের পরিবহণ। দুর্ভোগের বিষয়টি তৃণমূল নেতৃত্বের দেখা উচিত।’’

হুগলির বিভিন্ন এলাকার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ট্রেনে হাওড়ায় যান। তাতে বাড়তি ভিড় হয়। কাটোয়া-হাওড়া সাবার্বান প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি দীপক মণ্ডলের দাবি, নিত্যযাত্রীদের অনেককেই গেটে ঝুলে যেতে হয়েছে।

রাজমিস্ত্রি তপন পাল কুন্তীঘাট থেকে ভোরের ট্রেনে হাওড়ায় যান। তাঁর অভিজ্ঞতা, ‘‘বসার জায়গা পাইনি।’’ পান্ডুয়ার এক নিত্যযাত্রীর কথায়, ‘‘হাওড়া যেতে ঘণ্টা দেড়েক লাগে। পুরো পথই ঠাসাঠাসি ভিড়ে দাঁড়িয়ে যেতে হল।’’ তারকেশ্বর লোকালের এক যাত্রীর কথায়, ‘‘জলযাত্রীদের জন্য এমনিতেই শ্রাবণ মাসের সোমবার অফিসে যেতে ভোগান্তি হয়। সমাবেশের জন্য আরও হল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bus Services

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy