বিক্ষোভ: জলের দাবিতে পথ অবরোধ স্থানীয় বাসিন্দাদের। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রীষ্মের শুরুতেই দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় জল না পেয়ে মঙ্গলবার, দিনের ব্যস্ত সময়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার বাসিন্দারা। অবরোধকারীদের মধ্যে মহিলার সংখ্যাই ছিল বেশি। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ এই অবরোধ শুরু হয় মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের কালী কুণ্ডু লেনে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই তীব্র দহনের মধ্যেও হাওড়া পুরসভা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় জল সরবরাহ করতে পারছে না। যার ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, অবিলম্বে পুরসভার পদস্থ কর্তারা এসে পর্যাপ্ত পানীয় জল সরবরাহের আশ্বাস না দিলে তাঁরা অবরোধ তুলবেন না। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার এসে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নেতাজি সুভাষ রোডের একাংশে মধ্য হাওড়ার কয়েকটি ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় জল সরবরাহের জন্য কয়েক মাস আগে নতুন পাইপলাইন বসানো হয়। তার পরেই নেতাজি সুভাষ রোড সংলগ্ন নিধিরাম মাজি লেন ও মাজিপাড়া-সহ ২৪ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি অংশে হাওড়া পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জল কম আসতে থাকে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ বিষয়ে পুরসভাকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। বার বারই তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। এ দিন তাই সকাল থেকে তীব্র গরমের মধ্যেও রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। যার জেরে তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে জিটি রোডের কাছে মল্লিকফটক পর্যন্ত।
মীনা ঘোষ নামে এক অবরোধকারী বললেন, ‘‘এর আগে আরও বেশি গরমেও আমাদের এলাকায় জলের সঙ্কট এতটা তীব্র হয়নি। পুরসভাকে বার বার জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’ অর্ণব মজুমদার নামে আর এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘গত ছ’-সাত মাস ধরে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল আসছে না। জল এলেও কখনও আধ ঘণ্টা, কখনও বা ১০ মিনিটের বেশি থাকছে না। এই ধরনের সমস্যা এই এলাকায় আগে কোনও দিন দেখিনি।’’
লোকসভা নির্বাচনের মুখে মধ্য হাওড়ার এই জলসঙ্কটে রীতিমতো অস্বস্তিতে শাসকদল। শুধু তা-ই নয়, গুরুত্বপূর্ণ ওই এলাকার সিকি কিলোমিটারের মধ্যেই থাকেন মন্ত্রী অরূপ রায়, পুরসভার চেয়ারপার্সন তথা মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী ও নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তীও থাকেন সেখানে। বিক্ষোভের ঘটনায় দৃশ্যতই বিব্রত দেখায় শাসকদলের নেতাদের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্র। তিনি ঘটনাস্থল থেকেই ফোনে পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরেই পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার এসে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
এ বিষয়ে পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নেতাজি সুভাষ রোডের জলসঙ্কট মেটাতে নতুন পাইপলাইন বসেছে। সেখানকার কানেকশন পয়েন্টে কোনও সমস্যা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে ওই এলাকার সর্বত্র নয়, ছোট একটি গলির একাংশে এই সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের দ্রুত সমস্যা মেটাতে বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy