Advertisement
০৪ মে ২০২৪
ভাটার সময় গঙ্গার জলস্তর নামায় সমস্যা প্রকল্পে
Water Crisis

তীব্র গরমে জল সরবরাহ নিয়ে চিন্তা বিভিন্ন শহরে

বর্তমানে কেএমডিএ এবং পুরসভার নিজস্ব ব্যবস্থায় গঙ্গার জল শোধন করে পানীয় হিসেবে সরবরাহ করা হয়। গভীর নলকূল থেকেও জল তোলার বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে পুরসভাগুলির।

(বাঁ দিকে) ভাটায় জলস্তর নেমে গিয়েছে গঙ্গায়। উত্তরপাড়ার জলকলে তার জেরেই পর্যাপ্ত জল উঠেছে না।

(বাঁ দিকে) ভাটায় জলস্তর নেমে গিয়েছে গঙ্গায়। উত্তরপাড়ার জলকলে তার জেরেই পর্যাপ্ত জল উঠেছে না। হুগলির বিভিন্ন পুর এলাকায় পাড়ায় পাড়ায় পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে এইভাবেই পরিস্থিতি মোকাবিলার করছেন পুর কর্তৃপক্ষ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৯
Share: Save:

একে দাবদাহ, তায় ভাটায় গঙ্গার জলস্তর হু হু করে নেমে যাচ্ছে। জোড়া ধাক্কায় হুগলির বাঁশবেড়িয়া, জেলাসদর চুঁচুড়া এবং উত্তরপাড়া পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় জল সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে।

বর্তমানে কেএমডিএ এবং পুরসভার নিজস্ব ব্যবস্থায় গঙ্গার জল শোধন করে পানীয় হিসেবে সরবরাহ করা হয়। গভীর নলকূল থেকেও জল তোলার বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে পুরসভাগুলির। কিন্তু ভূগর্ভের জলস্তরও নামছে প্রতিদিন। অথচ, গরমে জলের চাহিদা উর্ধ্বমুখী। সব মিলিয়ে আগামী কিছু দিন পানীয় জলের সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন পুর-কর্তৃপক্ষ চিন্তায়।

কয়েক বছর আগে বাঁশবেড়িয়ায় কেএমডিএর তত্ত্বাবধানে গঙ্গার জল শোধন করে পানীয় জলের একটি প্রকল্প গড়ে তোলা হয়। সেখান থেকে বাঁশবেড়িয়া পুরসভার ২২টি এবং পাশের হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৩০টি ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। এ জন্য প্রতিদিন গঙ্গা থেকে ১৫ মিলিয়ন গ্যালন জল তোলা হয়। সূত্রের খবর, গঙ্গার জলস্তর নেমে যাওয়ায় বর্তমানে দৈনিক ৯ মিলিয়ন গ্যালনের বেশি জল তোলা সম্ভব হচ্ছে না। জলস্তর নেমে যাওয়ায় ভাটার সময় জল তোলা (ইনটেক) যাচ্ছে না। শুধুমাত্র জোয়ারের সময়েই তা করতে হচ্ছে।

হুগলি-চুঁচুড়া পুর এলাকায় এই পরিস্থিতির জেরে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরিশুদ্ধ জল পুরসভার নিজস্ব রিজ়ার্ভার (জলাধার, অর্থাৎ জল যেখানে জমিয়ে রাখা হয়) থেকে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু সার্বিক ভাবে জলের চাপ নিম্নমুখী বা কম থাকায় পুরসভার নিজস্ব উঁচু (ওভারহেড) জলাধারে জল তোলাই যাচ্ছে না। ফলে, সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী বলেন, ‘‘দূরের ওয়ার্ডগুলিতে জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। কারণ জলের চাপ একেবারেই থাকছে না। প্রয়োজনে আমরা জলের ট্যাঙ্কে করে এলাকাভিত্তিক জল সরবরাহের জন্য তৈরি। দেওয়া হচ্ছেও।’’ হুগলি-চুঁচুড়ার পুরপ্রধান অমিত রায়ের বক্তব্য, ‘‘জলের সমস্যা আছে। তবে, এখনও আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নিজস্ব উদ্যোগে। তবে এমন চলতে থাকলে এর পরে বিপদে পড়তে হবে।’’

দিন কয়েক আগেও বালির অভয়নগর, মাখলা লাগোয়া রঘুনাথপুর পঞ্চায়েতে গাড়িতে জলের ট্যাঙ্ক দেওয়া হচ্ছিল উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভা থেকে। কিন্তু গত কয়েক দিনে গঙ্গার জলস্তর ভাটার সময় এতটাই নামছে, উত্তরপাড়ার জলকলে জোয়ারের জন্য প্রকল্প আধিকারিকদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সেই কারণেই পুর-কর্তৃপক্ষের কপালে চিন্তার ভাঁজ।

পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা তৈরি। পুরবাসীকে জল কিনে খেতে হবে না। কিন্তু অনুরোধ, জল অপচয় বন্ধ করুন। অপরকে এ ব্যাপারে সতর্ক করুন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রচুর জল খরচ করে গাড়ি ধোওয়ার মতো কাজ, পুরসভার ট্যাপকল খুলে রাখা ইত্যাদি না করার পরামর্শ দেব। আমরা প্রয়োজনে লাগোয়া পঞ্চায়েত এবং পুরসভায় জল সরবরাহ করি। কিন্তু গঙ্গার জলস্তর নেমে যাওয়ায়
আমরা চিন্তিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water crisis Chinsurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE