বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসেছে সদ্য। তার পরেই মাসিক বিদ্যুৎ বিল এসেছে প্রায় ১২ হাজার টাকা!
টাকার অঙ্ক দেখে চোখ কপালে ব্যান্ডেলের কেওটা শরৎ পার্কের ছাপোষা ওই পরিবারের। একই পরিস্থিতি চুঁচুড়ার খাগড়াজোলের স্বপন রজকেরও। নতুন আমদানি হওয়া স্মার্ট মিটার নিয়ে বিভ্রান্ত সাধারণ মানুষ। সেখানে এমন বিলের কথা জেনে উদ্বেগ বেড়েছে বলে অনেকে জানাচ্ছেন।
ব্যান্ডের ওই পরিবারের গৃহকর্তা সুশান্ত জোশেফ কর্মসূত্রে গুজরাতে থাকেন। দুই কিশোরী মেয়েকে নিয়ে ব্যান্ডেলে থাকেন স্ত্রী পম্পা। তিনি জানান, গত মঙ্গলবার বিল আসে। তাতে টাকার অঙ্ক ১১ হাজার ৯৮৪ টাকা। পম্পা বলেন, ‘‘আজ পর্যন্ত কোনও দিন মাসে এত টাকার বিল আসেনি। গত বছর এই সময় বিলের অঙ্ক ছিল দু’হাজার টাকারও কম।’’ কেন বিলে এই ‘অস্বাভাবিক’ অঙ্ক, তা জানতে চেয়ে বিদ্যুৎ দফতরে চিঠি দিয়েছেন সুশান্ত। চিঠি পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। পম্পা জানান, বিদ্যুৎ দফতর তদন্তে এসেছিল। কিন্তু উত্তর মেলেনি।
খাগড়াজোলের বাসিন্দা স্বপন জানান, শুক্রবার বিদ্যুৎ দফতরের তরফে মোবাইলে বিল পাঠানো হয়েছে। এক মাসে বিল এসেছে প্রায় ১০ হাজার টাকা (৯ হাজার ৭৬০ টাকা)। ওই যুবকের কথায়, ‘‘গরমের সময় মাসে খুব বেশি হলে আড়াই হাজার টাকা বিল দিতে হত। স্মার্ট মিটার লাগানোর পরে চার গুণ!’’
হুগলির বিদ্যুৎ দফতরেরআঞ্চলিক আধিকারিক মধুসূদন রায়ের দাবি, বিলে কোনও ভুল নেই। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘যাঁদের বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে, তাঁরা এর আগেরযে বিল মিটিয়েছেন তা ওই সময়ের তিন মাস আগের। স্মার্ট মিটার বসানোর পরে আগের আড়াই থেকে তিন মাসের বিল একসঙ্গে আসায় কেউ কেউ বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা বিল মেটানোর জন্য দু-তিন বারের কিস্তির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’’ তিনি জানান, পরের বার থেকে এক মাসের বিদ্যুৎ খরচেরঅঙ্কই বিলে আসবে। ফলে, বিভ্রান্তি থাকবে না।
সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলির অবশ্য বক্তব্য, সাধারণ ভাবে মাসে যে বিল আসে, এ ক্ষেত্রে এসেছে তার চার থেকে ছয় গুণ। ফলে, সেই অনুযায়ী আড়াই-তিন মাসের টাকা যোগ করলেও বিল এসেছে অত্যধিক বেশি। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা বেজায় চিন্তায় পড়েছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)