Advertisement
E-Paper

সংক্রমিতের দেহ নিয়ে চার ঘণ্টা হাসপাতাল চত্বরে

স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, যে ভাবে বাইরে দেহটি পড়েছিল, তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবল আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২১ ০৫:৫৫
মৃত বাবার দেহ নিয়ে মগরা গ্রামীণ হাসাপাতালের সামনে বসে ছেলে।

মৃত বাবার দেহ নিয়ে মগরা গ্রামীণ হাসাপাতালের সামনে বসে ছেলে। ছবি: সুশান্ত সরকার।

তাঁর বাবা করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার সকালে তাঁকে মগরা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। এরপরে কী করবেন, কোথায় যাবেন, বুঝতে পারছিলেন না মৃতের যুবক ছেলে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও সহযোগিতা করেননি বলে তাঁর অভিযোগ। তাই প্রায় চার ঘণ্টা বাবার মৃতদেহ নিয়ে ওই হাসপাতাল চত্বরেই খোলা আকাশের নীচে কাটাতে হল তাঁকে।

প্রকাশ্যে, কোনও রকম সুরক্ষা ছাড়াই একজন সংক্রমিতের মৃতদেহ এ ভাবে পড়ে থাকার কথা জানতে পেরে সকালে হাসপাতালে আসা অনেকেই আঁতকে ওঠেন। শেষমেশ খবর পেয়ে মগরা থানার ওসি সুব্রত দাসের তৎপরতায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দেন। চুঁচুড়া-মগরা ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৃতদেহটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে চুঁচুড়া হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।

মগরার পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা ওই যুবকের খেদ, ‘‘আমি বারবার চিকিৎসক-নার্সদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, বাবার মৃতদেহ কী ভাবে সৎকার করব? কোনও সদুত্তর মেলেনি। প্রথমে ডেথ সার্টিফিকেটও দেননি। ওঁরা বারবার দেহ বাইরে নিয়ে যেতে বলেন। তাই বাবার মৃতদেহ নিয়ে খোলা আকাশের নীচে বসেছিলাম। শেষে ব্লক প্রশাসন মৃতদেহ নিয়ে গেল। কবে সৎকার হবে জানি না। বলেছে, আমাকে ফোনে জানিয়ে দেবে।’’

সংক্রমিত বাবার মৃতদেহ নিয়ে কেন এক যুবককে চার ঘণ্টা খোলা আকাশের নীচে বসে থাকতে হল, তার কোনও সদুত্তর দেননি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভদীপ চক্রবর্তী। তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমি ছুটিতে আছি। শুনেছি হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই প্রৌঢ় মারা যান। সরকারি নিয়ম মেনেই ডেথ সার্টিফিকেট
দেওয়া হয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫৯ বছরের সংক্রমিত ওই প্রৌঢ়ের বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় শনিবার রাতে তাঁকে অক্সিজেন দিতে হয়। কিন্তু সমস্যা না-মেটায় রবিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ বাবাকে নিয়ে মগরা গ্রামীণ হাসপাতালে যান ছেলে। সেখানে জরুরি বিভাগে ভর্তি করিয়েই তিনি জানতে পারেন, বাবা মারা গিয়েছেন। তারপরেই তাঁকে দেহ বাইরে নিয়ে যেতে বলা হয় বলে অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, যে ভাবে বাইরে দেহটি পড়েছিল, তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবল আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy