Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
CPIM

CPM: দুয়ারে সিপিএম, কোটি টাকা হুগলি জেলার কৌটো‌য়! আশাতীত সাড়া, দাবি করছেন নেতারা

সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, সম্প্রতি হুগলি জেলায় অর্থ সংগ্রহ অভিযান হয়। যার উদ্দেশ্য, জনসংযোগ এবং দলের জন্য বিন্দু-বিন্দু করে অর্থ সংগ্রহ।

জনসমর্থনের গভীরতা মাপছে সিপিএম।

জনসমর্থনের গভীরতা মাপছে সিপিএম। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২ ১৫:৫৯
Share: Save:

গত বিধানসভা ভোটের সময় ‘আলো’ কমে গিয়েছিল। এ বার কি ‘আলো’ ক্রমে আসিতেছে? খাতায়কলমে রাজ্য বিধানসভায় বামেদের খাতা খোলেনি। কিন্তু আগামী পঞ্চায়েত ভোটে কি পরিস্থিতির সামান্য হলেও পরিবর্তন হতে পারে? অন্তত হুগলির সিপিএম নেতৃত্বের তেমনই আশা। কারণ, তাঁদের কৌটোয় কোটি টাকা জমা পড়েছে।

জনসমর্থন কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জানতে বা দলের ‘ক্ষয়ক্ষতি’ মেরামত করতে প্রায়শই বাড়ি বাড়ি ঘুরে অর্থসংগ্রহ করার মতো কর্মসূচি গ্রহণ করে সিপিএম-সহ বামপন্থী দলগুলি। বিশেষত, ২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পরবর্তী পর্যায়ে সেই কর্মসূচিতে আরও জোর দিয়েছে সিপিএম। রাজনৈতিক মহলের একটি অংশের অবশ্য মত, স্থূল অর্থে ধরলে এই অর্থসংগ্রহ কর্মসূচি জনসমর্থন মেপে নেওয়ার একটি পরীক্ষা মাত্র। তবে সূক্ষ্ম অর্থে, ২০২১-এর বিধানসভার ভোটে পর্যুদস্ত রামশিবির থেকে কতটা সমর্থন বামশিবিরে আসতে পারে, তা মেপে নেওয়ার অন্যতম কৌশল।

সম্প্রতি হুগলিতে এমনই কর্মসূচি চালিয়েছিল সিপিএম। জেলা নেতৃত্বের দাবি, গত ১ জুন থেকে হুগলি জেলার ১৮টি ব্লক, ২০৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ১২টি পুরসভা এবং একটি পুরনিগমের পাড়া-মহল্লায় এই অভিযান চালানো হয়েছিল। এক দিকে জনসংযোগ, অন্য দিকে দলের জন্য বিন্দু-বিন্দু করে অর্থ সংগ্রহ।

সিপিএমের হুগলি জেলার সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের দাবি, জনসংযোগে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে। জেলা সম্পাদকের বক্তব্য, ‘‘আমরা যতটা আশা করেছি, তার থেকে অনেক বেশি অর্থসংগ্রহ হয়েছে। কয়েক বছর আগেও আমরা যখন মানুষের দুয়ারে গিয়েছি, তখন তাঁরা মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন। এ বার কিন্তু তা হয়নি। তাঁরা আমাদের কর্মীদের বসিয়েছেন। তাঁদের ক্ষোভ-দুঃখের কথা শুনিয়েছেন।’’

সিপিএমের ওই কর্মসূচি থেকে কত পরিমাণ অর্থ সংগৃহীত হয়েছে, তা ভেঙে বলতে চাননি দেবব্রত। তবে জেলা সিপিএমের নেতৃত্বের একাংশের দাবি, প্রায় এক কোটি টাকা সংগৃহীত হয়েছে ওই অভিযানে। সেই পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ দেখে সিঙ্গুরের জেলা হুগলিতে আশাবাদী সিপিএম। প্রত্যাশিত ভাবেই কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি এবং রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে নিশানা করে সুরও চড়িয়েছেন দেবব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষ যেমন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কথা বলেছেন, তেমনই রান্নার গ্যাস, তেলের দাম বৃদ্ধির কথাও বলেছেন। আবার গ্রামে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। মানুষের হাতে পয়সা নেই। তাঁদের বিকল্প কাজও নেই। পঞ্চায়েতেও যে লুটের রাজত্ব চলছে তা মানুষ দেখছেন।’’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে মানুষের মনে দাগ কাটতে আগস্ট মাস থেকে পঞ্চায়েতে আন্দোলন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে দেবব্রতের বক্তব্যকে পাত্তা দিচ্ছে না তৃণমূল। দলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সিপিএমের তো চাঁদা তোলাই অভ্যাস। ৩৪ বছর ধরে ওরা চাঁদা তুলেছে মানুষের থেকে। এখনও চাঁদা তুলে যাচ্ছে। সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ওই কমিউনিস্ট পার্টিটার। ওরা মানুষকে কিছু দেয়নি। শুধু নিয়ে গিয়েছে। মানুষ আর সিপিএমকে ফিরিয়ে আনবে না। ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। তার জন্য বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। আমরা তো চাই গণতন্ত্রে বিরোধী দল শক্তিশালী হোক। কিন্তু সিপিএম শুধু টিভির পর্দায় আছে।’’

সিপিএমের অর্থ সংগ্রহের ‘সাফল্য’ নিয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য স্বপন পালের বক্তব্য, ‘‘সিপিএমকে ৩৪ বছর মানুষ দেখে নিয়েছে। তাই তারা শূন্য হয়েছে। জনসংযোগ নয়, এটা টাকা তোলার কৌশল। এ ভাবে জনসংযোগ হয় না। বিজেপিই তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ। এক মাত্র বিজেপিই পারে তৃণমূলকে উৎখাত করতে। পঞ্চায়েত ভোটে কিছু ভোট কেটে হয়তো তৃণমূলের সুবিধা করে দেবে সিপিএম। বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি অত্যাচারের শিকার হয়েছে। সিপিএম বা কংগ্রেস তা হয়নি। সেই ক্ষতিপূরণ করে নিয়ে আমরা আবার লড়াইয়ের ময়দানে হাজির।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM Hooghly District CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE