Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Anganwadi center

খসে পড়ছে চাঙড়, দু’মাস ধরে পঠনপাঠন বন্ধ অঙ্গনওয়াড়িতে

পঠনপাঠন বন্ধ হলেও কর্মী ও সহায়িকাকে রোজই ওই কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে। সমস্যার কথা তাঁরা পঞ্চায়েত ও ব্লক কার্যালয়ে জানিয়েছেন।

বিপজ্জনক ম্যানহোল।

বিপজ্জনক ম্যানহোল।

সুদীপ দাস
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:২৯
Share: Save:

যখন-তখন খসে পড়ছে চাঙড়। দেওয়ালে ফাটল ধরছে। বিপদের আশঙ্কায় দু’মাস ধরে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে গিয়েছে চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েতের দেবীপুর হরিজন পল্লির একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। প্রায় দেড় দশক আগে কেন্দ্রটি তৈরি হয়েছিল।

পঠনপাঠন বন্ধ হলেও কর্মী ও সহায়িকাকে রোজই ওই কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে। সমস্যার কথা তাঁরা পঞ্চায়েত ও ব্লক কার্যালয়ে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ব্লক অফিস থেকে এক ইঞ্জিনিয়ার এসে কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে যান।

খাতায়-কলমে ওই কেন্দ্রের উপভোক্তা সংখ্যা ৭৩। এর মধ্যে ৫০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে গড়ে রোজ ২৫ জন কেন্দ্রে আসত বলে কর্মী-সহায়িকারা জানান। বাকি উপভোক্তারা অন্তঃসত্ত্বা। পঠনপাঠন বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন প্রায় ৫০ জনের রান্না করা খাবার এই কেন্দ্র থেকে বিলি করা হচ্ছে।

জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের কর্মী শ্যামলী শীট। তিনি বলেন, "গত নভেম্বরের মাঝামাঝি একদিন ছাদ থেকে প্রথম চাঙড় ভেঙে পড়ে। তখন সবে শিশুদের ছুটি হয়েছে। না হলে বড় বিপদের আশঙ্কা ছিল। তারপরে আরও কয়েক বার একই ঘটনা ঘটেছে। অনেক অভিভাবকই শিশুদের এখানে পাঠাতে রাজি নন। আমরাও ঝুঁকির কথা ভেবে পড়ানো বন্ধ রেখেছি।’’

সহায়িকা রানু দে বলেন, ‘‘দেওয়ালেও ফাটল ধরেছে। কেন্দ্রের পিছন দিকে থাকা সেপটিক ট্যাঙ্কের মুখ খোলা। যখন-তখন বিপদ ঘটে যেতে পারে।’’ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সংযোগ না-থাকায় রান্না করতে প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ ওই সহায়িকার।

বেহাল কেন্দ্রটির কথা জানতে পেরে সেখানে গিয়েছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য অজয় মোহান্তি। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ ঘরের শিশুদের কথা ভাবে না রাজ্য সরকার। তাই এতদিন ধরে এই কেন্দ্রের পঠনপাঠন বন্ধ রয়েছে।’’ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ব্লক অফিস ব্যবস্থা নেবে ভেবে আমরা উদ্যোগী হইনি। ব্লক অফিসে কথা বলে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’ বিডিও প্রিয়াঙ্কা বালা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নেবেবলে আমরাও ভেবেছিলাম। কিন্তু সেটা হয়নি। ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে অবিলম্বে ওই কেন্দ্রটি সংস্কার করা হবে।’’

ওই কেন্দ্রে দুই নাতি এবং নাতনিকে ভর্তি করিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা বাদামি রুইদাস। তিনি আর তিন জনকে কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রের যা ভগ্নদশা তাতে ওদের পাঠাতে সাহস হয় না। ওরা বাড়িতেই পড়াশোনা করছে।’’ আর এক মহিলা বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি তো একটা শিক্ষাকেন্দ্র। শিশুরা সেখানে পড়তে আসে। কিন্তু সেই কেন্দ্রই যদি বিপজ্জনক হয়, তা হলে শিশুদের সেখানে না পাঠানোই ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anganwadi center Chinsurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE