E-Paper

অর্থাভাবে হাওড়ায় বাঁধ মেরামতির কাজ শিকেয়

মুর্শিদাবাদে সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে বর্ষার আগে নদীবাঁধ সংস্কারের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছেন।

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৩ ০৭:৩৪
বাসুদেবপুরে হুগলি নদীর পাড়ে ভাঙন। নিজস্ব চিত্র

বাসুদেবপুরে হুগলি নদীর পাড়ে ভাঙন। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস শোনা যাচ্ছে। আর মাস দেড়েক পরেই শুরু হয়ে যাবে বর্ষার মরসুম। অথচ, হাওড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় নদীবাঁধ মেরামতির কাজ এখনও কার্যত বন্ধ! কারণ, অর্থাভাব।

একদিকে, বকেয়া না-মেলায় ঠিকা সংস্থাগুলি বাঁধের কাজ করতে আগ্রহ হারাচ্ছে। অন্যদিকে, প্রশাসনিক স্তরেও এ নিয়ে কোনও পরিকল্পনা হচ্ছে না বলে সেচ দফতরেরই একটি সূত্রের দাবি। এই পরিস্থিতিতে নদীবাঁধ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।

মুর্শিদাবাদে সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে বর্ষার আগে নদীবাঁধ সংস্কারের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তাতেও আশার আলো দেখছে না হাওড়া জেলার ঠিকা সংস্থাগুলি।

একাধিক ঠিকা সংস্থার কর্ণধাররা জানিয়েছেন, শুধু এই জেলাতেই তাঁদের বকেয়া অন্তত ১০০ কোটি টাকা। ফলে, মুখ্যমন্ত্রী যে টাকা বরাদ্দ করেছেন, তাতে তাঁদের কতটা সুরাহা হবে, তা নিয়ে তাঁরা সংশয়ে রয়েছেন। সাধারণত বকেয়া টাকার কিছুটা অংশ ৩১ মার্চের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এ বছর একটি পয়সাও মেলেনি বলে অভিযোগ ঠিকা সংস্থাগুলির।

সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলা সেচ দফতরের নিম্ন দামোদর নির্মাণভুক্তি (১) এবং (২) এর দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা একাধিকবার নবান্নে টাকার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু সেখান থেকে কোনও ইতিবাচক উত্তর আসেনি। জরুরি কাজ ছাড়া বড় কাজের পরিকল্পনা করতে বারণ করা হয়েছে।

দু’বছর আগে, ‘ইয়াসের’ সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। জরুরি ভিত্তিতে তা মেরামতির কাজ করেছিল ঠিকা সংস্থাগুলি। তার পর থেকে দু’বছরে ভাঙন মেরামতির বহু কাজ হয়। কিন্তু এখনও সেই সব কাজ বাবদ বকেয়া টাকার বড় অংশ মেলেনি বলেে সংস্থাগুলির অভিযোগ।

জেলা সেচ দফতরের কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, ভাঙা বাঁধ সংস্কারের জন্য যেমন পরিকল্পনা করা হচ্ছে না, তেমনই নামমাত্র যে সব কাজের দরপত্র ডাকা হচ্ছে, তাতে ঠিকা সংস্থারা আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

‘ইয়াসে’ শ্যামপুরে রূপনারায়ণের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। অন্যদিকে, শ্যামপুর এবং উলুবেড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় হুগলি নদীর বাঁধ ভাঙে। সেই সময় জরুরি ভিত্তিতে কিছু মেরামতির কাজ হয়। যে সব কাজ বাকি ছিল, তা পরে আর মেরামতি করা হয়নি টাকার অভাবে।

এর মধ্যে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে বহু এলাকায়। সেইসব মেরামতি কিছুটা হওয়ার পরে টাকার অভাবে থমকে গিয়েছে বাকি কাজ। বড় ভাঙনটি হয় শ্যামপুরের বেলাড়ি পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুরে হুগলি নদীতে। কোনও মতে ঠেকনা দেওয়া হলেও বড় কোনও মেরামতির কাজ না হওয়ায় আগামী বর্ষায় বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে সেচ দফতরের কর্তাদেরই একটা বড় অংশের। এ ছাড়াও, শ্যামপুরের গাদিয়াড়ায় হুগলি নদীতে, শসাটিতে রূপনারায়ণে, উলুবেড়িয়ার জগদীশপুর বাঁশতলায় হুগলি নদীর বাঁধের অবস্থা খুব খারাপ। বর্ষার আগেই এইসব ক্ষত মেরামত হওয়ার কথা।

আমতা এবং উদয়নারায়ণপুরে দামোদর, রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরীর সংস্কারের কাজ অবশ্য চলছে। কিন্ত সেই কাজ চলছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের টাকায়। সেখানে সমস্যা নেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Uluberia Dam Renovation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy